দুই সিজদার মাঝের দোয়া: অর্থ, পদ্ধতি ও ফজিলত
নামাজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। নামাজের প্রতিটি অংশেই আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক দৃঢ় হয়। এর মধ্যে দুই সিজদার মাঝের দোয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মুসলমানদের জন্য দোয়া করার বিশেষ সুযোগ দেয়। এই নিবন্ধে আমরা দুই সিজদার মাঝের দোয়া, তা পড়ার পদ্ধতি এবং এর ফজিলত নিয়ে আলোচনা করব।
---
দুই সিজদার মাঝের দোয়া
দুই সিজদার মাঝের দোয়া হলো সেই বিশেষ দোয়া যা প্রতিটি রাকাতে দুই সিজদার মধ্যে বসে পাঠ করা হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিভিন্ন সময়ে এই দোয়া পাঠ করতেন। একটি প্রসিদ্ধ দোয়া হলো:
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِي وَاجْبُرْنِي وَعَافِنِي وَارْزُقْنِي وَارْفَعْنِي
উচ্চারণ:
"আল্লাহুম্মাগফির্লি, ওয়ারহাম্নি, ওয়াহদিনি, ওয়াজবুর্নি, ওয়া’আফিনি, ওয়ারযুকনি, ওয়ারফা’নি।"
অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন, দয়া করুন, সঠিক পথ দেখান, আমার অভাব পূরণ করুন, সুস্থতা দান করুন, আমাকে রিজিক দিন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করুন।”
---
দুই সিজদার মাঝের দোয়া কিভাবে পড়তে হয়
১. প্রথম সিজদা শেষে "আল্লাহু আকবার" বলে মাথা উঠিয়ে দু'হাঁটুর উপর বসুন।
২. শরীর সোজা রেখে ধীরস্থিরভাবে বসুন, এটি “জলসাহ” অবস্থান নামে পরিচিত।
৩. এই সময়ে উপরোক্ত দোয়া পাঠ করুন।
৪. দোয়া পড়ার পর দ্বিতীয় সিজদার জন্য "আল্লাহু আকবার" বলে সিজদায় যান।
রাসূলুল্লাহ (সা.) ধীরস্থিরভাবে দুই সিজদার মাঝে বসতেন এবং এই দোয়া পাঠ করতেন। তিনি দ্রুততার সাথে এই অংশ শেষ করতেন না, বরং মনোযোগ দিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন।
---
দুই সিজদার মাঝের দোয়ার ফজিলত
১. গুনাহ মাফের সুযোগ:
দুই সিজদার মাঝের দোয়ায় আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার মাধ্যমে বান্দার গুনাহ মাফ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২. দয়া ও হেদায়াত:
এই দোয়ায় আল্লাহর কাছে দয়া ও সঠিক পথে চলার জন্য প্রার্থনা করা হয়, যা একজন মুসলমানের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ।
৩. রিজিক ও সুস্থতার জন্য দোয়া:
দোয়ায় রিজিক এবং শারীরিক সুস্থতার কথা উল্লেখ রয়েছে। এটি আল্লাহর কাছ থেকে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনার একটি মাধ্যম।
৪. আখিরাতের মর্যাদা বৃদ্ধি:
এই দোয়া পাঠের মাধ্যমে একজন মুমিন তার আখিরাতের মর্যাদা বৃদ্ধির প্রার্থনা করেন, যা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম।
---
উপসংহার
দুই সিজদার মাঝের দোয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল, যা নামাজের সময় আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করার সুযোগ সৃষ্টি করে। এটি শুধুমাত্র ক্ষমার মাধ্যম নয়, বরং আল্লাহর দয়া, হেদায়াত, সুস্থতা এবং রিজিকের প্রার্থনার একটি সুন্দর উপায়। আমাদের উচিত নামাজে মনোযোগ সহকারে এই দোয়া পাঠ করা এবং এর ফজিলত থেকে উপকৃত হওয়া।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই দোয়া যথাযথভাবে পড়ার তাওফিক দান করুন এবং এর ফজিলত অর্জন করার সুযোগ দিন। আমিন।