এনোফিলিক্স মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায়। ম্যালেরিয়া একটি প্রানঘাতী রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিবছর ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে,২০ কোটির ও বেশি মানুষ ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয় প্রতি বছর।২০১৬ সালে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে ৫ লাখ লোকের মৃত্যু হয়।মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ম্যালেরিয়ার পাদুর্ভাব অনেক বেশি থাকে।
ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণসমূহ
👉 নির্দিষ্ট সময় পরপর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা এ রোগের প্রধান লক্ষণ।
👉জ্বর সাধারণত ১০৫-১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে।
👉 নির্দিষ্ট বিরতিতে জ্বর আসা-যাওয়া করে; যেমন- একদিন পর পর জ্বর, তা ৩-৪ দীর্ঘ হওয়া এবং এরপর ঘাম দিয়ে জ্বর কমে যায়।
👉 জ্বর কমে গেলে তাপমাত্রা ও স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাওয়া।
👉 মাঝারি থেকে তীব্র কাপুনি অনুভব করা
👉 অনেকসময় তীব্র শীত অনুভব করা।
👉 শরীরে প্রচন্ড ব্যথা করা।
👉মাথা ব্যথা অনুভব করা ও অনিদ্রা দেখা দেয়া।
👉 খাদ্যাভ্যাস এ পরিবর্তন আসা, খাবার প্রতি রুচি কমে যাওয়া, ক্ষুধামন্দা অনুভব করা।
👉 কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া।
👉 বমি বমি ভাব হওয়া, অনেক সময় বমি হওয়া হজমে গোলযোগ দেখা দেয়।
👉 অতিরিক্ত ঘাম বের হওয়া,ক্লান্তি অবসাদ অনুভব করা।
👉 অনেক পিপাসা অনুভব হওয়া।
👉 মাংসপেশী,ও তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা হওয়া।
👉 প্লীহা ও যকৃতের সমস্যা দেখা দেয়া।
👉 রক্তশূন্যতা দেখা দেয়া।
👉 ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া হলে,রক্তশূন্যতা, কিডনি বৈকল্য, শ্বাসকষ্ট হওয়া, জন্ডিস, খিঁচুনি, রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়। জরুরি চিকিত্সা না পেলে এসব রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে, এমন কি মৃত্যুও হতে পারে।
ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণুর নাম কি
স্ত্রী এনোফিলিস মশার কামড়ে দেহে প্রবেশ করে স্যালাইভা। তারপর প্রোটিস্ট নামক অনুজীবের মাধ্যমে রক্তে ছড়িয়ে পড়ে পরজীবি। এর ফলে দেখা দেয় ম্যালেরিয়া।ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণুর নাম হলো প্লাজমোডিয়াম। প্লাজমোডিয়াম পরজীবের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া ছড়ায়।
ম্যালেরিয়া হলে করণীয় ও ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসা
👉ম্যালেরিয়া হয়েছে সন্দেহ হলে প্রথমেই একজন এমবিবিএস ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
👉রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই কেবল ম্যালেরিয়া হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়।
👉এছাড়া বর্তমান সময়ে দ্রুত এক বিন্দু রক্ত নিয়েই ম্যালেরিয়ার অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা যায়।
👉ম্যালেরিয়ার উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে দ্রুত টেস্ট করিয়ে ফেলা উচিত।
👉অবশ্যই ঔষধ সেবনের আগে তা করতে হবে।
👉 অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ম্যালেরিয়ার রোগী সপ্তাহ খানিকের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যান।
তবে কোনো জটিলতা থাকলে অনেক সময় রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে।
👉ম্যালেরিয়া শনাক্ত হলে,এর ধরন এবং সংক্রমণের তীব্রতার উপর এই রোগের চিকিৎসা পরিচালনা হয়।
👉ম্যালেরিয়ার তীব্রতার উপর নির্ভর করে চিকিৎসা।
বিঃদ্রঃ - স্বাস্থ্যই সম্পদ
ম্যালেরিয়া রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায়
👉ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের জন্য কার্যকর কোনো প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি।
👉একটু সতর্ক ও সাবধান থাকলেই এ রোগ সম্পূর্ণ প্রতিকার ও প্রতিরোধ করা সম্ভব।
👉ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি সম্পন্ন এলাকায় লম্বা হাতা সম্পন্ন পোশাক পরিধান করতে হবে।
👉ঘর উঠান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
👉 কোথাও যেন বৃষ্টির পানি জমে না থাকে,মশা জন্ম নিতে পারে এমন বস্তু গুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে দিন,যাতে মশা জন্ম না নিতে পারে।
👉সন্ধ্যার আগেই জানালা বন্ধ করে দিন।
👉মশা তাড়ানোর জন্য সন্ধ্যার আগে থেকেই প্রস্তুতি নিন।যেমন ধুপ জালানো,কয়েল ও মশারি ইত্যাদি।
👉দিনে ও রাতে অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
👉মশা প্রতিরোধ স্প্রে অথবা ক্রীম ব্যবহার করুন।
👉ম্যালেরিয়ার ঝুকিতে থাকা এলাকায় যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করূন।
👉 নতুন মশা জন্ম নেওয়ার স্থানগুলো বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখুন,যাতে নতুন মশা জন্ম না নিতে পারে।