বোম্বাই মরিচের আচার

বোম্বাই মরিচের আচার


বোম্বাই মরিচের আচার: তীব্র স্বাদের এক অনন্য রেসিপি


বাংলাদেশ এবং ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বোম্বাই মরিচ বা নাগা মরিচ অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং তা মূলত তার তীব্র ঝালের জন্য পরিচিত। এই মরিচের ব্যবহার শুধু মশলা বা সসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি আচার তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। বোম্বাই মরিচের আচার একদিকে যেমন স্বাদে অসাধারণ, তেমনি এটি ঝালপ্রেমী মানুষদের জন্য একটি মজাদার মশলা হিসেবে কাজ করে। এই আচার স্বাদের সাথে সাথে শরীরের জন্যও উপকারী হতে পারে, কারণ এতে ব্যবহৃত তাজা উপাদানগুলি পুষ্টিকর এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।


বোম্বাই মরিচের আচার তৈরির উপকরণ


বোম্বাই মরিচের আচার তৈরির জন্য আপনাকে কিছু সহজ এবং সাধারন উপকরণের প্রয়োজন হবে:


১০-১২টি বোম্বাই মরিচ


২ চা চামচ সেল্টার (লবণ)


২ চা চামচ হালদির গুঁড়া


১ চা চামচ মেথির গুঁড়া


২ চা চামচ সরিষার তেল


১ চা চামচ আদা-রসুন বাটা


১ চা চামচ চিনি


২-৩ চা চামচ লেবুর রস


১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়া


১ চা চামচ কালোজিরা (যদি পছন্দ হয়)



আচার তৈরির পদ্ধতি


১. মরিচ প্রস্তুতি:

প্রথমে বোম্বাই মরিচগুলো ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে, তাদের ডंঠল কেটে ফেলুন এবং মরিচের ভেতর যদি বীজ থাকে তা বের করে দিন (বীজ ছাড়লে আচার ঝাল কম হবে)। তবে, যদি আপনি খুব ঝাল আচার চান, বীজ রেখে দিতে পারেন।


২. মরিচের তেল ও মশলা মেশানো:

একটি প্যানে সরিষার তেল গরম করুন। তেল গরম হলে এতে আদা-রসুন বাটা ও হলুদ গুঁড়া দিন। মশলাগুলো ভালোভাবে ভাজুন যতক্ষণ না তাদের সুগন্ধ বের হতে শুরু করে। এরপর এতে মেথির গুঁড়া, কালোজিরা, লবণ, চিনি এবং বাকি সব মশলা দিয়ে ভালো করে মেশান।


৩. মরিচ মিশানো:

এই মশলার মিশ্রণটি তেল থেকে নামিয়ে একটু ঠান্ডা হতে দিন। তারপর তাতে বোম্বাই মরিচগুলো সুন্দরভাবে মিশিয়ে নিন। সব মরিচের উপর মশলা ও তেলের মিশ্রণ ভালোভাবে লেগে যাওয়া উচিত।


৪. লেবুর রস যোগ করা:

সবশেষে এতে লেবুর রস দিন। লেবুর রস আচারকে টক স্বাদ দেয় এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী রাখতে সাহায্য করে।


৫. আচার সংরক্ষণ:

এটি একটি পরিষ্কার এবং শুকনো কাঁচের জারে ভরে রাখুন। কিছুদিন পর এটি ভালোভাবে পেকে যাবে এবং ঝাল এবং মশলাদার আচার হিসেবে প্রস্তুত হবে। সাধারণত, ৩-৪ দিন পর এটি খাওয়া শুরু করতে পারবেন।


বোম্বাই মরিচের আচার খাওয়ার উপকারিতা


১. পাচনতন্ত্রের জন্য উপকারী:

বোম্বাই মরিচের আচার খাবারের সাথে খেলে তা পেটের হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে। মরিচের ক্যাপসাইসিন হজমে সাহায্য করে এবং খাবারের স্বাদ বাড়ায়।


২. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:

মরিচের মধ্যে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি শরীরকে সর্দি, জ্বর এবং অন্যান্য সিজনাল রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।


৩. রুচি বৃদ্ধি:

যারা সাধারণত খাবারের স্বাদে আগ্রহী নন, তাদের জন্য বোম্বাই মরিচের আচার অত্যন্ত উপকারী হতে পারে। এটি খেলে খাবারের প্রতি আগ্রহ তৈরি হতে পারে।


উপসংহার


বোম্বাই মরিচের আচার স্বাদে অতুলনীয় এবং এটি ঝালপ্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ মশলা। এই আচারটি তৈরি করা খুবই সহজ, এবং এটি যে কোনো রান্নার সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে, যেমন ভাত, রুটি, অথবা তরকারির সঙ্গে। তবে, এর তীব্র ঝাল আপনাকে সতর্ক থাকতে সাহায্য করবে, বিশেষত যদি আপনি ঝাল খেতে না পারেন। তাই, বোম্বাই মরিচের আচার খাওয়ার সময় আপনার শরীরের সহ্যক্ষমতা বুঝে খাবেন।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন