পাইলস (Hemorrhoids) হলো একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা মলদ্বারের চারপাশে রক্তনালী ফুলে যাওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়। যদিও পাইলসের সমস্যার জন্য অনেকেই অপারেশনকে সমাধান হিসেবে ভাবেন, তবে অপারেশন ছাড়াও নানা ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি এবং জীবনযাপন পরিবর্তন মাধ্যমে পাইলসের উপশম সম্ভব। এই ব্লগে আমরা জানব অপারেশন ছাড়া পাইলস এর চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি।
পাইলস এর কারণ
দীর্ঘ সময় বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
অপর্যাপ্ত পানি পান
দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া
গর্ভাবস্থায় পাইলস বৃদ্ধি পাওয়া
পাইলস এর লক্ষণ
মলদ্বারে ব্যথা বা জ্বালা
রক্তপাত (বিশেষত মল ত্যাগের সময়)
মলদ্বারে চুলকানি বা অস্বস্তি
মলত্যাগের পরে পাইলস ফুলে থাকা
মলদ্বারে টিউমার বা ফুলে ওঠা অনুভূতি
অপারেশন ছাড়া পাইলস এর চিকিৎসা পদ্ধতি
১. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
পাইলসের সমস্যা কমাতে ফাইবারের পরিমাণ বাড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফল, শাকসবজি, দানা, ব্রাউন রাইস এবং ওটস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং পাইলসের সমস্যাও কমে।
২. পানি বেশি পান করা
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করার মাধ্যমে মল নরম থাকে, যা পাইলসের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
৩. অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ভেষজ
হলুদ: এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে, যা পাইলসের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
আলিভ অয়েল: মলদ্বারে লাগানো হলে এটি স্নিগ্ধতা বজায় রাখে এবং ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
৪. ঠাণ্ডা সেঁক
পাইলসের প্রদাহ কমানোর জন্য ঠাণ্ডা সেঁক ব্যবহার করতে পারেন। একটি কাপড়ে বরফ মোড়ানো এবং মলদ্বারের আশেপাশে ১০-১৫ মিনিট ধরে সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়।
৫. সিটবাথ (Sitz Bath)
একটি বেসিনে হালকা গরম পানি নিয়ে ১৫-২০ মিনিট মলদ্বার ডুবিয়ে রাখুন। এটি পাইলসের প্রদাহ এবং ব্যথা কমাতে সহায়ক।
৬. কিভাবে শৌচাগারে যেতে হবে
মলত্যাগের সময় বেশি চাপ প্রয়োগ না করা, ধীরে ধীরে মলত্যাগ করা এবং দীর্ঘ সময় শৌচাগারে বসে না থাকা পাইলসের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
পাইলস এর প্রতিরোধে করণীয়
বেশি চলাফেরা ও শরীরচর্চা
মলত্যাগের জন্য দেরি না করা
আলগা পোশাক পরিধান করা
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার বা তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা
রোজ রাতে পর্যাপ্ত ঘুম নেওয়া
উপসংহার
অপারেশন ছাড়া পাইলসের চিকিৎসা সম্ভব এবং এটি অনেক ক্ষেত্রেই কার্যকর হতে পারে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, পর্যাপ্ত পানি পান, এবং কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে পাইলসের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে সমস্যা জটিল হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
আরও স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস পেতে ভিজিট করুন: https://usdate.blogspot.com