হযরত ইদ্রিস (আঃ) এর জীবনী
হযরত ইদ্রিস (আঃ) ছিলেন আল্লাহ প্রদত্ত এক মহামানব, যাঁর জীবন আমাদের জন্য অনেক শিক্ষার উৎস। ইসলামী ঐতিহ্যে তাঁকে নবী এবং রসূল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কুরআন ও হাদিসে তাঁর সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ বর্ণনা পাওয়া যায়। হযরত ইদ্রিস (আঃ)-এর জীবন কাহিনী তাঁর পবিত্রতা, জ্ঞান, এবং আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের প্রতিচ্ছবি।
জন্ম ও বংশ
হযরত ইদ্রিস (আঃ)-এর পিতার নাম ছিল ইয়ারিদ এবং তাঁর পূর্বপুরুষ ছিলেন হযরত শীষ (আঃ)। ইসলামী ঐতিহ্য অনুযায়ী, তিনি হযরত আদম (আঃ)-এর সপ্তম প্রজন্মের বংশধর। তাঁর জন্ম মিসরে হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
নবুয়ত প্রাপ্তি
হযরত ইদ্রিস (আঃ) নবুয়ত প্রাপ্ত হন হযরত শীষ (আঃ)-এর পরে। তিনি মানুষকে তাওহীদের দাওয়াত দেন এবং আল্লাহর বিধান অনুসারে জীবনযাপনের নির্দেশ দেন।
কুরআনে বর্ণিত ইদ্রিস (আঃ)
পবিত্র কুরআনে হযরত ইদ্রিস (আঃ)-এর নাম দুই স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে। সূরা মারইয়ামে আল্লাহ বলেন:
“আর বইয়ে ইদ্রিসের কথা স্মরণ করো। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সত্যপরায়ণ এবং একজন নবী। আমি তাঁকে উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছি।” (সূরা মারইয়াম: ৫৬-৫৭)
বৈশিষ্ট্য ও জ্ঞান
হযরত ইদ্রিস (আঃ)-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা। তিনি ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি লেখা-পড়া শিখেছিলেন এবং বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। ইসলামী ঐতিহ্যে তাঁকে গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, এবং সেলাইয়ের আবিষ্কারক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
স্বর্গে আরোহন
ইসলামী বর্ণনায় জানা যায়, হযরত ইদ্রিস (আঃ)-কে আল্লাহ তাআলা জীবিত অবস্থায় স্বর্গে উঠিয়ে নেন। এ সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে:
“আমি তাঁকে উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছি।” (সূরা মারইয়াম: ৫৭)
শিক্ষণীয় বিষয়
হযরত ইদ্রিস (আঃ)-এর জীবন থেকে আমরা ধৈর্য, আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, এবং জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষা পাই। তাঁর জীবন আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, পবিত্র জীবনযাপন এবং আল্লাহর আদেশ পালন করা একজন মানুষের প্রধান দায়িত্ব।
উপসংহার
হযরত ইদ্রিস (আঃ) ছিলেন এক মহান নবী, যাঁর জীবন মানবজাতির জন্য শিক্ষণীয় এবং অনুপ্রেরণার উৎস। তাঁর সম্পর্কে জানতে এবং তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নিতে আমাদের আরও গবেষণা করা উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নবীদের জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন।