অযু হল নামাজের পূর্বশর্ত এবং ইসলামিক পবিত্রতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান। সঠিকভাবে অযু করার জন্য নিয়ত করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অযুর নিয়ম অনুযায়ী, এটি শুধু শারীরিক পরিশুদ্ধতা নয়, বরং আত্মিক ও মানসিক বিশুদ্ধতার মাধ্যমও। আসুন, অযুর নিয়ত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
অযুর গুরুত্ব ও ফজিলত
অযু করা মুসলমানদের জন্য ফরজ ইবাদতের অংশ। কুরআন ও হাদিসে অযুর গুরুত্ব সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, "অযু ছাড়া কোনো নামাজ গ্রহণযোগ্য নয়।" এছাড়া, অযুর মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয় এবং এটি জান্নাতে প্রবেশের অন্যতম মাধ্যম।
অযুর নিয়ত কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ?
নিয়ত হল অন্তরের সংকল্প, যা ইবাদতের মূল ভিত্তি। অযুর নিয়ত করতে হলে মনে রাখতে হবে যে, এটি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হচ্ছে। মুখে নিয়ত পড়া বাধ্যতামূলক নয়, তবে অভ্যাস হিসেবে বলা যেতে পারে:
نَوَيْتُ الوُضُوْءَ لِرَفْعِ الحَدَثِ الأَصْغَرِ لِلّٰهِ تَعَالٰى
উচ্চারণ: "নাওয়াইতুল উডু’আ লিরাফইল হাদাসিল আসগার লিল্লাহি তা’আলা।"
অর্থ: "আমি ছোট নাপাকি দূর করার জন্য আল্লাহ তায়ালার উদ্দেশ্যে অযু করার নিয়ত করলাম।"
অযুর নিয়ত করার সঠিক পদ্ধতি
অযু করার পূর্বে নিয়ত করা গুরুত্বপূর্ণ, তবে নিয়ত করতে গিয়ে জোরে বলার প্রয়োজন নেই। নিয়ত অন্তরে করতে হয় এবং অযুর জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়:
প্রথমে বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা।
মনে মনে অযু করার সংকল্প করা (যেমন: "আমি নামাজের জন্য অযু করছি")।
অযুর সকল নিয়ম যথাযথভাবে পালন করা (মুখ ধোয়া, হাত ধোয়া, মাথা মাসহ করা ইত্যাদি)।
অযু শেষ করার পর দোয়া পড়া, যাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।
অযুর নিয়ম ও করণীয়
অযু করার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনুসরণ করা উচিত:
অযুর প্রতিটি অঙ্গ ধোয়ার সময় দোয়া পড়া।
তিনবার করে মুখ, হাত ও পা ধোয়া সুন্নত।
পানি অপচয় না করা এবং যথাযথভাবে প্রত্যেকটি অংশ পরিষ্কার করা।
অযুর ফজিলত ও উপকারিতা
অযু করলে শুধু শারীরিক পবিত্রতা অর্জন হয় না, বরং এটি আধ্যাত্মিকভাবে বিশুদ্ধতা অর্জনের মাধ্যমও। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে অযু করে এবং দুই রাকাত নামাজ পড়ে, তার পূর্বের গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হয়।"
অযুর মাধ্যমে আমরা শারীরিক ও আত্মিকভাবে পবিত্র থাকি এবং আল্লাহর রহমত লাভ করি। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন অযুর নিয়ম মেনে এবং সঠিক নিয়তসহ অযু করা, যাতে আমাদের ইবাদত কবুল হয়।