ইসলামে অযু শুধুমাত্র শারীরিক পবিত্রতার জন্য নয়, বরং এটি আত্মিক পবিত্রতারও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। অযুর পর বিশেষ একটি নামাজ আছে, যা তাহিয়াতুল ওযু নামে পরিচিত। এটি সুন্নত নামাজ এবং মহানবী (সা.) এই নামাজ আদায় করার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন।
তাহিয়াতুল ওযু নামাজের গুরুত্ব
হাদিসে এসেছে, নবী করিম (সা.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি উত্তমভাবে অযু করে, তারপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে এবং এতে নিজের মনোযোগ নিবিষ্ট রাখে, তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়।" (সহিহ মুসলিম)
এ থেকে বোঝা যায়, তাহিয়াতুল ওযু নামাজ শুধু সওয়াব অর্জনের একটি মাধ্যম নয়, বরং এটি জান্নাত লাভের পথকেও সুগম করে।
তাহিয়াতুল ওযু নামাজ পড়ার নিয়ম
তাহিয়াতুল ওযু নামাজ আদায়ের পদ্ধতি খুবই সহজ। নিচে ধাপে ধাপে এর নিয়ম উল্লেখ করা হলো—
নিয়ত: মনে মনে এই নিয়ত করতে হবে— "আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাহিয়াতুল ওযু নামাজ আদায় করছি।"
দুই রাকাত নামাজ: সাধারণ সুন্নত নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়তে হবে।
সুরা পাঠ:
প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়ার পর যেকোনো সুরা পড়তে হবে।
দ্বিতীয় রাকাতেও সুরা ফাতিহা ও অন্য কোনো সুরা পড়তে হবে।
নামাজ শেষ করা: যথারীতি রুকু, সেজদা ও তাশাহহুদ পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।
তাহিয়াতুল ওযু নামাজের ফজিলত
তাহিয়াতুল ওযু নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি হলো—
পাপ মোচনের মাধ্যম: এই নামাজ পড়লে ছোটখাটো গুনাহ মাফ হয়।
জান্নাতের সুসংবাদ: হাদিসে বলা হয়েছে, যে এই নামাজ পড়বে, তার জন্য জান্নাতের দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যাবে।
আল্লাহর নৈকট্য লাভ: এই নামাজ ব্যক্তিকে আল্লাহর আরও কাছাকাছি নিয়ে যায় এবং তাঁর রহমত লাভে সহায়ক হয়।
তাহিয়াতুল ওযু নামাজ কখন পড়া উচিত?
অযুর পরপরই এই নামাজ পড়া উত্তম।
যদি অযুর পরপর নামাজ পড়ার সুযোগ না থাকে, তবে পরে পড়লেও সওয়াব পাওয়া যাবে।
ফজরের ফরজের আগে ও মাগরিবের ফরজের আগে না পড়াই উত্তম।
উপসংহার
তাহিয়াতুল ওযু নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল, যা মহানবী (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন। এটি আমাদের আত্মিক প্রশান্তি এনে দেয় এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সহায়ক হয়। তাই অযুর পর এই দুই রাকাত নামাজ পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত, যাতে আমরা আল্লাহর অশেষ রহমত লাভ করতে পারি।