আমাশয় (Diarrhea) একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেক কারণে হতে পারে। তবে যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে ওঠে, তখন তা পুরাতন আমাশয় বা ক্রনিক ডায়রিয়া হিসেবে পরিচিত। এই রোগটি দেহে পানির ঘাটতি সৃষ্টি করে, ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে পুরোনো আমাশয় দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে, চিকিৎসা না করলে এটি মারাত্মক হতে পারে। তবে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব।
পুরাতন আমাশয়ের কারণ
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: মেয়াদোত্তীর্ণ বা অপরিষ্কার খাবার খাওয়ার কারণে বায়োকেমিক্যাল ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে।
বেকটেরিয়া বা ভাইরাস সংক্রমণ: স্যালমোনেলা, ই. কোলি, বা রোটাভাইরাসের কারণে দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় হতে পারে।
অ্যালার্জি: কিছু খাবারের প্রতি অ্যালার্জি থেকে দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় হতে পারে।
দৈনিক চাপ বা মানসিক সমস্যা: মানসিক চাপ বা উদ্বেগও আমাশয় সৃষ্টি করতে পারে।
পুরাতন আমাশয়ের লক্ষণ
দেহে পানির ঘাটতি
পেট ব্যথা ও অস্বস্তি
অনেক সময় পেট ফোলা
স্রাব বা মলের সাথে রক্ত আসা
ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভূতি
পুরাতন আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি
১. ORS (Oral Rehydration Solution) ব্যবহার
আমাশয়ে পানির ঘাটতি পূরণ করতে ORS খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের স্যাল্ট ও শর্করা ভারসাম্য বজায় রাখে।
২. পেঁপে ও মধু
পেঁপে ও মধু আমাশয়ের চিকিৎসায় খুব কার্যকর। পেঁপে পাচনতন্ত্রের জন্য ভালো এবং মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবে কাজ করে।
৩. সাদা চালের পেটি (Rice Water)
সাদা চালের পানি খেলে পেট শান্ত থাকে এবং পেটের ভিতরের সংক্রমণও কমে। এটি পেটের খাওয়া-দাওয়ার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৪. আদা ও তুলসী চা
আদা ও তুলসী মূত্রাশয়কে ভালো রাখে এবং পেটের সজীবতা বাড়ায়। এটি পেটের ব্যথা ও অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।
৫. পানির পরিমাণ বৃদ্ধি
আমাশয়ে পানির ঘাটতি পূরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে।
প্রতিরোধের উপায়
পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ: উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার যেমন সবজি, ফলমূল এবং স্যুপ খাওয়া ভালো।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: খাবার হাত ধোয়ার আগে হাত পরিষ্কার রাখা এবং সব খাবার ভালোভাবে রান্না করা উচিত।
অতিরিক্ত চর্বি ও মসলাযুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকা: এসব খাবার পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
মানসিক চাপ কমানো: মানসিক চাপ কমালে দেহের পাচনতন্ত্র ভালোভাবে কাজ করে।
উপসংহার
পুরাতন আমাশয় একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, সঠিক ঘরোয়া চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই রোগের মোকাবেলা করতে সহায়ক হতে পারে। যদি এই সমস্যাটি দীর্ঘদিন চলতে থাকে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরও তথ্য ও টিপস পেতে ভিজিট করুন: https://usdate.blogspot.com