ইসলামে বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও সামাজিক চুক্তি। তবে, অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন—অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া কি কোনো মেয়ে নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করতে পারবে? এ বিষয়ে কুরআন, হাদিস এবং ফিকহবিদদের মতামতের আলোকে আলোচনা করা প্রয়োজন।
ইসলামে অভিভাবকের (ওলি) ভূমিকা
হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন:
“যে নারী তার অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিবাহ করবে, তার বিবাহ বাতিল, বাতিল, বাতিল।”
— (তিরমিজি: ১১০২, আবু দাউদ: ২০৮۳)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, একজন নারীর বিয়েতে তার অভিভাবকের সম্মতি থাকা জরুরি।
হানাফি মাযহাব ও অভিভাবকের অনুমতি
হানাফি মাযহাবে প্রাপ্তবয়স্ক (বালেগা) মেয়ে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া নিজেই বিয়ে সম্পন্ন করতে পারে, যদি পাত্র উপযুক্ত হয়। তবে তা সামাজিক ও পারিবারিকভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে বলেই সাধারণভাবে অভিভাবকের সম্মতি গ্রহণ করা উত্তম বলে মনে করা হয়।
অন্যান্য মাযহাবের অবস্থান
শাফেয়ী, মালিকি ও হাম্বলি মাযহাবের মতে, অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া নারীর বিয়ে সহিহ নয়। তাদের মতে, অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া করা বিয়ে বাতিলযোগ্য।
আইনগত দিক (বাংলাদেশ প্রসঙ্গে)
বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক আইনে প্রাপ্তবয়স্ক নারী আইনীভাবে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করতে পারেন। তবে সামাজিকভাবে তা বিতর্কিত ও অনেক সময় নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
উপসংহার: ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সমাজ বাস্তবতা
ইসলামের আদর্শ হলো পারিবারিক ঐক্য বজায় রেখে বিয়ে সম্পন্ন করা। যদিও কিছু মাযহাব অনুযায়ী মেয়ের অধিকার আছে অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বিয়ের, তবুও নিরাপত্তা, সম্মান এবং দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের স্বার্থে অভিভাবকের পরামর্শ ও সম্মতি গ্রহণ করা সর্বোত্তম।
আরও ইসলামিক আর্টিকেল পড়ুন: https://usdate.blogspot.com