কুরবানী কার উপর ওয়াজিব | qurbani kar upor owajib

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব | qurbani kar upor owajib


ইসলামিক শরিয়তে কুরবানী একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। প্রতি বছর ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে মুসলিমরা কুরবানী দেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব? আসুন, জানি কুরবানী কার উপর ওয়াজিব এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ।

কুরবানী কি এবং কেন দেওয়া হয়?

কুরবানী হলো একটি পশু যেটিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যবাই করা হয়। এটি ইসলামি পরম্পরায় হযরত ইব্রাহীম (আ.) এবং তাঁর ছেলে ইসমাইল (আ.) এর কাহিনী থেকে নেওয়া। প্রতি বছর ঈদ-উল-আযহা তে মুসলমানরা কুরবানী দেন, যা তাদের বিশ্বাস এবং আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে।

কুরবানী প্রদানের মাধ্যমে, একটি মুসলমান ধন-সম্পদের প্রতি অধিকার এবং ভগবানের আদেশ পালন করেন। তবে কুরবানী কার উপর ওয়াজিব তা জানার জন্য ইসলামের নির্দিষ্ট কিছু শর্ত রয়েছে।

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়?

কুরবানী ওয়াজিব হয় বিশেষ কিছু ব্যক্তির উপর। নিচে সেই শর্তগুলো দেওয়া হলো:

  1. বালেগ (বয়সের পূর্ণতা): কুরবানী দেওয়ার জন্য ব্যক্তি বালেগ হওয়া উচিত। অর্থাৎ, শিশুরা কুরবানী দেওয়ার ক্ষেত্রে ওয়াজিব হয় না।

  2. হালাল উপার্জন: কুরবানী দেওয়ার জন্য একটি মুসলমানের উপার্জন হালাল হওয়া উচিত। যদি ব্যক্তির উপার্জন হারাম হয়, তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয় না।

  3. নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ: কুরবানী করার জন্য ঐ ব্যক্তি ধনসম্পত্তির নেসাব অর্জন করেছেন কি না তা দেখতে হয়। নেসাব হলো একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ধন যা ইসলামে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

  4. স্বাস্থ্যবান: কুরবানী দেওয়ার জন্য শারীরিকভাবে সুস্থ হওয়া জরুরি। অসুস্থ বা পঙ্গু ব্যক্তি কুরবানী দিতে বাধ্য নন।

  5. বাসস্থান: কুরবানী করতে হবে এমন একটি স্থানে যেখানে সে বাস করে, এবং সেখানে কুরবানী করা ওয়াজিব।

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব না?

কিছু ক্ষেত্রে কুরবানী ওয়াজিব হয় না, যেমন:

  1. মহিলারা যদি প্রেগন্যান্ট বা লকডাউন অবস্থায় থাকেন।

  2. শিশুরা যারা এখনও বালেগ হননি।

  3. ধনসম্পদের অভাবী বা দীন-দরিদ্র যারা কুরবানী দেওয়ার উপযুক্ত পরিমাণ সম্পদ রাখেন না।

  4. ব্যক্তিগত কারণে কোনো ব্যক্তি কুরবানী দিতে না চায়, তাতে সে কুরবানী দেওয়ার দায়ে থাকে না।

কুরবানী দেওয়া না হলে কি হয়?

যদি কোনো ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হয় এবং সে কুরবানী না দেয়, তাহলে তার জন্য শাস্তি হতে পারে। কুরবানী ন করা হলে, আল্লাহর কাছে তা অক্ষমতা হিসেবে ধরা হতে পারে। এছাড়া কুরবানী না দিলে সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও অজ্ঞতা বা অবহেলার সম্মান হতে পারে।

কুরবানীর গুরুত্ব এবং তা পালন করার উপকারিতা

কুরবানী প্রদানের মাধ্যমে মুসলিমরা আল্লাহর প্রতি আনুগত্য এবং ধন-সম্পদের প্রতি অAttachment প্রদর্শন করেন। এটি একদিকে যেখানে ধনসম্পদ বিতরণে সহায়তা করে, অন্যদিকে ইসলামিক সমাজে সমানভাবে সম্পদের বন্টন নিশ্চিত করে। কুরবানী সামাজিক সংহতি এবং ভালোবাসার বার্তা দেয়।

কুরবানী ও মুসলিম জীবনে এর প্রভাব

কুরবানী মুসলমানদের জীবনে আধ্যাত্মিক এবং সামাজিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি মাধ্যম, এবং মুসলিমদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ বাড়ায়। এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে সহানুভূতি, সহমর্মিতা এবং দরিদ্রদের সাহায্য করার মনোভাব গড়ে ওঠে।


এখন আপনি জানেন, কুরবানী কার উপর ওয়াজিব এবং এটি পালন করার গুরুত্ব কী। কুরবানী মুসলমানদের জীবনে একটি বিশেষ স্থান রাখে, এবং এটি তাদের আধ্যাত্মিক উন্নতি ও সমাজকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন