শবে বরাত মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রজনী। এটি আরবি শব্দ "লাইলাতুল বরাত" থেকে এসেছে, যার অর্থ মুক্তির রজনী। ইসলামী হাদিস ও বর্ণনায় এই রাতের ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক কথা বলা হয়েছে। চলুন কিছু সহীহ হাদিসের আলোকে শবে বরাত সম্পর্কে জানি।
শবে বরাতের রাত সম্পর্কে রাসূল (সা.) কী বলেছেন?
হাদিসে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“আল্লাহ তাআলা শাবান মাসের মধ্য রজনীতে (শবে বরাতে) দুনিয়ার সবচেয়ে নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন এবং কাবিলা বানু কালবের ছাগলের পশমের সংখ্যা থেকেও অধিক লোককে মাফ করে দেন।”
— (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, এই রাতটি ক্ষমার রাত। অতএব, আমাদের উচিত এ রাতে ইবাদতে রত থাকা।
শবে বরাতের রাতে ইবাদতের গুরুত্ব
রাসূল (সা.) শাবান মাসে অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি রোজা রাখতেন এবং ইবাদতে মনোনিবেশ করতেন। একটি হাদিসে এসেছে:
“শাবান মাস এমন একটি মাস, যা রজব ও রমজানের মাঝে অবস্থিত। মানুষ এতে গাফেল থাকে। অথচ এটি এমন একটি মাস, যাতে আমলসমূহ আল্লাহর কাছে উত্তোলিত হয়। আমি চাই, আমার আমল যেন রোযা অবস্থায় উত্তোলিত হয়।”
— (নাসাঈ)
এ হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, শবে বরাতসহ শাবান মাসে ইবাদতের ফজিলত রয়েছে।
শবে বরাতে মাফ না পাওয়া ব্যক্তিরা
যদিও এই রাতে অসংখ্য মানুষকে মাফ করা হয়, কিছু মানুষ এই রহমত থেকে বঞ্চিত থাকে। যেমন:
মুশরিক (যারা আল্লাহর সঙ্গে শরিক করে)
হিংসুক
আত্মীয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নকারী
অহংকারী ব্যক্তি
রাসূল (সা.) বলেছেন, “এই রাতে আল্লাহ তাআলা সমস্ত সৃষ্টিকে দেখেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া সবাইকে মাফ করে দেন।”
— (ইবনু মাজাহ)
শবে বরাত উপলক্ষে আমাদের করণীয়
এই বরকতময় রাতে আমাদের কিছু করণীয় হলো:
ইবাদতে মগ্ন থাকা
নামাজ পড়া, বিশেষ করে নফল নামাজ
কুরআন তিলাওয়াত
তাওবা ও ইসতেগফার করা
আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা
উপসংহার: শবে বরাত আমাদের জীবনে কী বার্তা দেয়
শবে বরাত শুধুই একটি রাত নয়, এটি আমাদের জন্য আত্মশুদ্ধির সুযোগ। হাদিসের আলোকে আমরা বুঝতে পারি, এই রাতটি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বিশেষ দান। এ রাতকে আমল ও ক্ষমার সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করাই মুমিনের পরিচয়।
পাঠকবন্ধু, আপনি আরও ইসলামিক বিষয়, তারিখ ও গুরুত্বপূর্ণ রাত সম্পর্কে জানতে চাইলে নিয়মিত ভিজিট করুন:
https://usdate.blogspot.com