হযরত আইউব (আঃ) এর জীবনী
হযরত আইউব (আঃ) ছিলেন আল্লাহর একজন প্রিয় নবী এবং ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতার মূর্ত প্রতীক। তাঁর জীবনে অভাবনীয় সব পরীক্ষা আসে, কিন্তু তিনি কখনো আল্লাহর ওপর থেকে বিশ্বাস হারাননি। তাঁর জীবনী আমাদের জন্য একটি অনুপ্রেরণাদায়ক দৃষ্টান্ত, যা ধৈর্য, সহনশীলতা এবং আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আনুগত্যের শিক্ষা দেয়।
পরিচয়
হযরত আইউব (আঃ) ছিলেন হযরত ইসহাক (আঃ)-এর পৌত্র এবং হযরত ইয়াকুব (আঃ)-এর ভ্রাতুষ্পুত্র। তিনি ছিলেন ধনী, সম্মানিত এবং অত্যন্ত ধার্মিক একজন ব্যক্তি। আল্লাহ তাঁকে প্রচুর সম্পদ, বিপুল জমি, পশুপালন, এবং সন্তান-সন্তুতি দিয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন।
ধৈর্য ও পরীক্ষা
আল্লাহ হযরত আইউব (আঃ)-কে পরীক্ষা করার জন্য তাঁর সব সম্পদ, সন্তান এবং স্বাস্থ্য কেড়ে নেন। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন এবং তাঁর শরীর বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। এমনকি লোকেরা তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করে। তবে এ কঠিন পরীক্ষার মধ্যেও তিনি ধৈর্য ধরে আল্লাহর ইবাদত করতে থাকেন এবং বলেন:
“আমি অসুস্থ, আর তুমি দয়ালুদের মধ্যে সর্বোত্তম দয়ালু।” (সূরা আল-আম্বিয়া: ৮৩)
আল্লাহর রহমত
হযরত আইউব (আঃ)-এর ধৈর্য ও প্রার্থনায় আল্লাহ সন্তুষ্ট হন এবং তাঁকে সুস্থ করে দেন। আল্লাহ বলেন:
“তুমি তোমার পা দিয়ে আঘাত করো; এখানে ঠাণ্ডা পানি আছে, যা দ্বারা তুমি গোসল করবে এবং পান করবে।” (সূরা ছাদ: ৪২)
এভাবে আল্লাহ তাঁর সমস্ত হারানো সম্পদ ও সন্তান ফিরিয়ে দেন এবং তাঁর জীবনে বরকত বৃদ্ধি করেন।
শিক্ষণীয় বিষয়
১. ধৈর্যের শিক্ষা: হযরত আইউব (আঃ)-এর জীবনী আমাদের শেখায় যে, জীবনে যত কঠিন পরিস্থিতিই আসুক, ধৈর্য ও বিশ্বাস ধরে রাখা মুমিনের কর্তব্য।
২. আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা: তিনি কখনো আল্লাহর প্রতি অভিযোগ করেননি, বরং সব পরিস্থিতিতে আল্লাহর উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতেন।
৩. শুকরিয়া আদায়: আল্লাহর দেওয়া ছোট-বড় প্রতিটি নিয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞ থাকা উচিত, যা হযরত আইউব (আঃ)-এর জীবনে সুস্পষ্ট।
উপসংহার
হযরত আইউব (আঃ)-এর জীবন আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস, ধৈর্য, এবং কৃতজ্ঞতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর জীবনী আমাদের জীবনের প্রতিকূলতায় ধৈর্য ধারণ করতে এবং আল্লাহর উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে শিক্ষা দেয়। আল্লাহ আমাদেরকে হযরত আইউব (আঃ)-এর মতো ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ বানান। আমিন।