রমজান মাসের সেহেরির দোয়া, ফজিলত ও ওয়াজিব, সুন্নাত ও ফরজ

রমজান মাসের সেহেরির দোয়া, ফজিলত ও ওয়াজিব, সুন্নাত ও ফরজ


রমজান মাসের সেহেরির দোয়া, ফজিলত ও ওয়াজিব, সুন্নাত ও ফরজ

রমজান মাস মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র এবং বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই মাসে আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত এবং নাজাতের সুযোগ পাওয়া যায়। রোজা রাখার সময় সেহেরি ও ইফতার গুরুত্বপূর্ণ রুটিনের অংশ। সেহেরি করা রোজাদারের জন্য একটি বিশেষ আমল, যা আল্লাহর রহমত এবং সাহায্যের প্রাপ্তির একটি উপায়। রমজান মাসের সেহেরি, এর দোয়া এবং ফজিলত সম্পর্কে জানাটা গুরুত্বপূর্ণ।

রমজান মাসের সেহেরি ও এর দোয়া

সেহেরি হলো রোজার পূর্বে খাবার গ্রহণ করা, যা ফজরের আগে করা হয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত, এবং যিনি সেহেরি করেন, তাকে আল্লাহ বিশেষভাবে পুরস্কৃত করেন। সেহেরির উদ্দেশ্য হলো শরীরকে সারা দিনের রোজার জন্য প্রস্তুত করা এবং আল্লাহর কাছে রোজার সাহায্য প্রার্থনা করা।

সেহেরির দোয়া

সেহেরির সময় একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করা যায়, যদিও সুনান হাদিসে কোন নির্দিষ্ট দোয়া উল্লেখ করা হয়নি, তবে এই সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করে রোজার সহায়তা ও বরকত প্রার্থনা করা উচিত। কিছু দোয়া ও বলার অভ্যাস হলো:

  • اللّهُمّ بارِكْ لَنَا فِي سَحُورِنَا وَاجْعَلْهُ عَوْنًا لَنَا عَلَى صِيَامِهِ وَقِيَامِهِ
    "হে আল্লাহ, আমাদের সেহেরিতে বরকত দাও এবং তা যেন আমাদের রোজা ও নামাজে সহায়ক হয়।"

এই দোয়া সেহেরির সময় পড়া যেতে পারে, তবে কোনো নির্দিষ্ট দোয়া বাধ্যতামূলক নয়।

সেহেরির ফজিলত

রমজান মাসে সেহেরির অনেক ফজিলত রয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন:
"সেহেরি খাওয়ার মধ্যে বরকত আছে, সেহেরি খাও, কারণ এতে বিদায় হয় শয়তান এবং এতে আল্লাহর রহমত রয়েছে।" (সহিহ বুখারি)

১. বরকত: সেহেরির খাবারে বরকত থাকে, যা রোজার জন্য শক্তি প্রদান করে এবং সারা দিন তৃপ্তি অনুভব করাতে সহায়তা করে।
২. শয়তান থেকে নিরাপত্তা: সেহেরি খাওয়া শয়তান থেকে মুক্তি ও আল্লাহর রহমত প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি করে।
৩. উম্মাহর ঐক্য: সেহেরি খাওয়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ একত্রিত হয়, এবং এটি একটি ঐক্য ও ভাইচারা বাড়ানোর মাধ্যম।
৪. হাদিসে প্রশংসা: মহানবী (সা.) সেহেরি খাওয়ার গুরুত্ব দিয়েছেন, এবং বলেছেন, এটি রোজার বরকত বৃদ্ধি করে।

সেহেরি ও রোজার ওয়াজিব, সুন্নাত ও ফরজ

ফরজ

রোজা রাখার জন্য, সেহেরি খাওয়া ফরজ নয়, তবে রোজার সাহরি ও সেহেরি খাওয়ার ফলে রোজার পূর্ণতা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া যায়। তাই এটি অবশ্যই সুন্নাত এবং প্রতিটি মুসলমানের জন্য অনুসরণযোগ্য।

সুন্নাত

মহানবী (সা.) সেহেরি খাওয়ার সুন্নাত দিয়েছেন এবং এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নাত আমল। সেহেরি করা থেকে বিরত থাকা, এমনকি এক টুকরো খাওয়া বা পানি পান করাও সুন্নাত।
"তোমরা সেহেরি খাও, কারণ সেহেরিতে বরকত আছে।" (সহিহ বুখারি)

ওয়াজিব

সেহেরি করা ওয়াজিব নয়, কিন্তু এটি রোজার পূর্ণতা দেয় এবং রোজার শক্তি বাড়ায়।

উপসংহার

রমজান মাসের সেহেরি খাওয়া সুন্নাত, এবং এটি রোজার সহায়ক, কারণ এতে আল্লাহর রহমত ও বরকত থাকে। সেহেরি খাওয়ার মাধ্যমে আমরা শুধু শরীরিক দিক থেকেই উপকৃত হই না, বরং আধ্যাত্মিক দিক থেকেও উপকৃত হই। সেহেরির সময় দোয়া করা, রোজার সাহায্য প্রার্থনা করা এবং মহান আল্লাহর রহমত প্রাপ্তির আশা করা উচিত।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন