২০২৫ সালে ঈদুল আযহা কত তারিখে হবে এবং ঈদুল আযহার ফজিলত
ঈদুল আযহা ইসলামের অন্যতম বড় দুটি ঈদের মধ্যে একটি। এটি মূলত কুরবানির ঈদ হিসেবে পরিচিত, যা প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে উদযাপন করা হয়। ঈদুল আযহা একটি বিশেষ ধর্মীয় গুরুত্বসম্পন্ন দিন, যা মুসলমানদের জন্য আল্লাহর প্রতি পবিত্র আত্মনিয়োগ এবং তাঁদের বিশ্বাসের এক প্রকাশ। এটি হজ পালনকারীদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, তবে সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই দিনটি ঈদ আনন্দের সাথে পালন করেন।
২০২৫ সালে ঈদুল আযহা কত তারিখে হবে?
ইসলামী ক্যালেন্ডারের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ঈদুল আযহা পালন করা হবে বুধবার, ৫ই জুন। তবে চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে এই তারিখ একদিন এগোতে বা পিছোতে পারে। ঈদুল আযহা পালন হয় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে, যা কুরবানির পশু sacrificed করার সময় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়।
ঈদুল আযহা এর ফজিলত
১. কুরবানি এবং আল্লাহর প্রতি আত্মনিয়োগ
ঈদুল আযহার প্রধান ফজিলত হলো কুরবানি করা। হাদিসে বর্ণিত রয়েছে যে, কুরবানির পশু আল্লাহর কাছে এক নিবেদিত আত্মনিয়োগ হিসেবে গৃহীত হয়।
"তোমাদের কুরবানি আল্লাহর কাছে পৌঁছায়, কিন্তু তোমাদের দান এবং শ্রম আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না।" (সহিহ মুসলিম)
কুরবানি সঠিকভাবে করা হলে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পাপের ক্ষমা লাভ হয়।
২. ইব্রাহীম (আ.)-এর আত্মত্যাগের স্মৃতি
ঈদুল আযহা হলো হজরত ইব্রাহীম (আ.) এবং তাঁর পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) এর মহান আত্মত্যাগের স্মৃতি। হজরত ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহর আদেশে তাঁর পুত্রকে কুরবানি দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন, তবে আল্লাহ তাঁর বান্দার পরীক্ষা নেন এবং পশু দিয়ে কুরবানি দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এই ঘটনা মুসলিমদের মধ্যে ত্যাগ এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের দৃঢ়তার প্রতীক।
৩. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন
হাদিসে বলা হয়েছে, ঈদুল আযহার দিন আল্লাহ বান্দাদের প্রতি বিশেষ দয়ালু থাকেন। এই দিনে আল্লাহ পাপী বান্দাদের ক্ষমা করেন এবং তাঁদের পরবর্তী জীবনের জন্য দোয়া কবুল করেন।
"তুমি যদি ঈদের দিন কুরবানি করো, তবে তোমার গুনাহ মাফ হয়ে যায়।"
৪. অধিকারীদের জন্য দান ও সাহায্য
ঈদুল আযহায় কুরবানি করে গরিব ও অসহায়দের সহায়তা করা মুসলিমদের দায়িত্ব। কুরবানির মাংস গরিবদের মধ্যে বিতরণ করার মাধ্যমে সামাজিক ঐক্য এবং মানবিকতা প্রচারিত হয়। এটি একটি মুসলিম সমাজের শোষিতদের প্রতি সহানুভূতি ও সাহায্যের প্রতীক।
৫. ঈদুল আযহার নামাজের সওয়াব
ঈদুল আযহার নামাজ ঈদুল ফিতরের মতো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ঈদের নামাজের মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর কাছে তাঁর রহমত ও বরকত প্রার্থনা করেন এবং একে অপরকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। ঈদের নামাজ মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য এবং বন্ধুত্ব বৃদ্ধি করে।
ঈদুল আযহা এর দিনে করণীয়
১. ঈদের নামাজ আদায় করা: ঈদুল আযহার নামাজ অবশ্যই জামাতের সঙ্গে আদায় করা উচিত।
২. কুরবানি দেওয়া: আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে কুরবানি করা গুরুত্বপূর্ণ।
৩. গোসল ও নতুন পোশাক পরা: ঈদের দিনে গোসল করা এবং নতুন বা পরিষ্কার পোশাক পরা সুন্নত।
৪. সাদাকাত ও দান করা: গরিবদের সাহায্য করা এবং কুরবানির মাংস বিতরণ করা।
৫. দুয়া ও ইবাদত করা: ঈদের দিন আল্লাহর কাছে দোয়া করা এবং ইবাদত সম্পাদন করা।
উপসংহার
ঈদুল আযহা হলো ত্যাগ, কুরবানির এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের বিশেষ দিন। এই দিনে মুসলমানদের উচিত আল্লাহর জন্য কুরবানি করা, গরিবদের সাহায্য করা, এবং একে অপরের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগ করে নেওয়া। ২০২৫ সালের ঈদুল আযহা আমাদের জীবনে আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত, এবং বরকত নিয়ে আসুক, এবং আমাদের আত্মিক উন্নতি ও শান্তি দান করুন।