ইসলামে মা-বাবার মর্যাদা অনেক উঁচুতে স্থান পেয়েছে। কুরআন ও হাদিসে বারবার মা-বাবার প্রতি সদ্ব্যবহার, শ্রদ্ধা ও আনুগত্যের কথা বলা হয়েছে। এই প্রবন্ধে আমরা হাদিসের আলোকে মা-বাবার গুরুত্ব ও কর্তব্য তুলে ধরবো।
মা-বাবার প্রতি সদ্ব্যবহার সম্পর্কে হাদিস
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:
“আল্লাহর সন্তুষ্টি রয়েছে পিতার সন্তুষ্টিতে এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টি রয়েছে পিতার অসন্তুষ্টিতে।”
(তিরমিজি, হাদিস: ১৮৯৯)
এই হাদিসে বোঝা যায়, পিতার সঙ্গে ভালো আচরণ না করলে আল্লাহর সন্তুষ্টিও অর্জন করা যায় না।
মা-এর মর্যাদা নিয়ে বিশেষ হাদিস
একজন সাহাবি জিজ্ঞেস করলেন, “হে আল্লাহর রাসুল! আমার সর্বাধিক সদ্ব্যবহার পাওয়ার যোগ্য কে?”
তিনি বললেন: “তোমার মা।”
সাহাবি আবার জিজ্ঞেস করলেন: “এরপর কে?”
তিনি বললেন: “তোমার মা।”
সাহাবি আবার জিজ্ঞেস করলেন: “এরপর কে?”
তিনি বললেন: “তোমার মা।”
এরপর বললেন: “এরপর তোমার পিতা।”
(সহিহ বুখারি ও মুসলিম)
এই হাদিসে মায়ের মর্যাদাকে তিনবার তুলে ধরা হয়েছে, যা তার অবস্থানকে বিশেষ করে তোলে।
মা-বাবাকে অবজ্ঞা করা মহাপাপ
রাসুল (সা.) বলেন:
“তোমরা কি জানো সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি?”
সাহাবিগণ বললেন: “আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন।”
তিনি বললেন: “আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা এবং মা-বাবার অবাধ্য হওয়া।”
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৯৭৩)
এই হাদিস প্রমাণ করে, মা-বাবার অবাধ্য হওয়া কবিরা গুনাহ।
জীবিত ও মৃত মা-বাবার হক আদায়
এক সাহাবি জানতে চাইলেন, “হে রাসুল! আমার মা মারা গেছেন, আমি তার জন্য কিছু করতে পারি কি?”
তিনি বললেন: “হ্যাঁ, তুমি তার জন্য দোয়া করতে পারো, তার পক্ষ থেকে সদকা করতে পারো এবং তার আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে পারো।”
(আবু দাউদ, হাদিস: ৫১৪২)
এটি প্রমাণ করে, মা-বাবা মৃত্যুর পরও তাদের হক আদায় সম্ভব।
উপসংহার: মা-বাবা সন্তুষ্ট হলে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন
মা-বাবা ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিভাবক। হাদিসে বলা হয়েছে, তাদের খেদমত করা জান্নাতের পথ। আমরা যদি হাদিস অনুযায়ী মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও দয়ালু হই, তাহলে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারবো।
আরও ইসলামিক ও জীবনঘনিষ্ঠ লেখার জন্য ভিজিট করুন: https://usdate.blogspot.com