বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে নানা আর্থিক অনিয়ম, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি ও সুশাসনের অভাবে কিছু ব্যাংক বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী যেসব ব্যাংক মূলধন ঘাটতি, তারল্য সংকট কিংবা আর্থিক অনিয়মে জর্জরিত, তাদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয়।
এখানে ২০২৫ সালের তথ্য অনুযায়ী আলোচনা করা হলো এমন ১০টি ব্যাংকের নাম, যারা বিভিন্ন কারণে ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে।
১. বেসিক ব্যাংক লিমিটেড
বহু বছর ধরে দুর্নীতি ও অনিয়মে জর্জরিত এই ব্যাংকটি সরকার নিয়ন্ত্রিত হলেও বারবার মূলধন ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে।
২. আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক
প্রাক্তন আরব বাংলাদেশ ব্যাংক নামে পরিচিত এই ব্যাংকটি দীর্ঘদিন ধরেই খেলাপি ঋণে জর্জরিত।
৩. ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক)
অনিয়মের কারণে বহুবার আলোচিত হওয়া এই ব্যাংক এখনো আস্থার সংকটে রয়েছে।
৪. বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড
খেলাপি ঋণের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি, যার ফলে ব্যাংকটির আর্থিক স্বাস্থ্য দুর্বল।
৫. এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক
প্রশাসনিক জটিলতা ও পরিচালন ব্যর্থতায় এই ব্যাংককেও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকের তালিকায় রাখা হয়।
৬. মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (MTB)
যদিও প্রতিষ্ঠিত ব্যাংক, তবুও সম্প্রতি কিছু আর্থিক অনিয়ম ও তারল্য সংকটের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
৭. প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড
অতিরিক্ত ঋণ বিতরণ ও খেলাপি ঋণের কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারিতে রয়েছে।
৮. সিটি ব্যাংক লিমিটেড
নির্দিষ্ট কিছু রিস্ক ফ্যাক্টরের কারণে শঙ্কিত আর্থিক বিশ্লেষকরা এই ব্যাংককে আংশিক ঝুঁকিতে রাখেন।
৯. জনতা ব্যাংক
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হলেও বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে ঝুঁকিতে।
১০. রূপালী ব্যাংক
কর্মকর্তাদের অনিয়ম এবং খারাপ ঋণের বোঝা এই ব্যাংককে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রেখেছে।
উপসংহার
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে টিকিয়ে রাখতে হলে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলোকে চিহ্নিত করে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধান, সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আর্থিক নিরাপত্তা ও সচেতনতা সম্পর্কে আরও জানার জন্য নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ব্লগ।
দ্রষ্টব্য: ব্যাংকের ঝুঁকি সংক্রান্ত তথ্য সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হতে পারে। তাই বিনিয়োগ বা ব্যাংকিং লেনদেনের আগে সর্বশেষ সরকারি প্রতিবেদন বা বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।