জরায়ু নিচে নেমে যাওয়া বা Uterine Prolapse হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে নারীদের জরায়ু (গর্ভাশয়) তার স্বাভাবিক অবস্থান থেকে নিচের দিকে সরে আসে বা কখনো যোনির বাইরে চলে আসে। এটি সাধারণত ৪০ বছরের বেশি বয়সী বা সন্তান জন্মদানের পর নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই আর্টিকেলে আমরা জরায়ু নিচে নেমে যাওয়ার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
জরায়ু নিচে নেমে যাওয়ার কারণ
বারবার সন্তান প্রসব করা
ভারী ওজন ওঠানো বা অতিরিক্ত কষ্টকর শারীরিক পরিশ্রম
দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য
বয়স বৃদ্ধির কারণে পেলভিক পেশির দুর্বলতা
ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি
অতিরিক্ত কাশি বা হাঁপানি
জরায়ু নিচে নেমে যাওয়ার লক্ষণগুলো কী কী?
১. তলপেটে ভারী অনুভব হওয়া
২. মূত্রত্যাগে সমস্যা বা অসুবিধা অনুভব করা
৩. পিঠে বা কোমরে ব্যথা
৪. যোনির ভেতরে বা বাইরে কিছু ঝুলে আছে মনে হওয়া
৫. দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে অস্বস্তি অনুভব হওয়া
৬. যৌনমিলনের সময় ব্যথা
৭. মূত্র ঝরার সমস্যা বা ইনফেকশন হওয়া
৮. চলাফেরা বা বসার সময় অস্বাভাবিক চাপ অনুভব হওয়া
জরায়ু নিচে নেমে গেলে করণীয় কী?
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া: প্রথমেই একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
বExercises (Kegel Exercise): পেলভিক মাংসপেশিকে শক্তিশালী করতে কেগেল ব্যায়াম কার্যকর।
ওজন নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত ওজন জরায়ুতে চাপ সৃষ্টি করে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
পেশার সংশোধন: ভারী কাজ কমিয়ে দেওয়া এবং বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।
হারমোন থেরাপি: ইস্ট্রোজেন ঘাটতি পূরণে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী থেরাপি দেওয়া হতে পারে।
প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার: গুরুতর ক্ষেত্রে জরায়ু ঠিক জায়গায় বসাতে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
জরায়ু নিচে নামা প্রতিরোধে যা করবেন
নিয়মিত ব্যায়াম
কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া
প্রচুর পানি পান করা
সন্তান প্রসবের পর যথাযথ বিশ্রাম ও চিকিৎসা নেওয়া
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
হাঁচি-কাশি হলে মুখ ঢেকে রাখা যাতে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে
উপসংহার
জরায়ু নিচে নেমে যাওয়া একটি চিকিৎসাযোগ্য সমস্যা, তবে প্রাথমিক লক্ষণগুলো জানলে এবং সময়মতো ব্যবস্থা নিলে এটি সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যেকোনো অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নারীদের স্বাস্থ্যবিষয়ক আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের জন্য ভিজিট করুন https://usdate.blogspot.com।