বিয়ে একজন নারীর জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তবে অনেক সময় প্রশ্ন উঠে—অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া কোনো মেয়ে বিয়ে করতে পারবে কি? ইসলামিক শরিয়ত ও দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গিতে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে
ইসলামে মেয়ের বিয়ের ক্ষেত্রে ওয়ালির (অভিভাবকের) ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাদীস শরীফে এসেছে:
"যে মেয়ে তার অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিবাহ করে, তার সে বিবাহ বাতিল।" – (তিরমিজি, আবু দাউদ)
তাহলে কী বোঝা যায়?
ইসলাম মতে, প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বিয়ের জন্য ওয়ালির অনুমতি থাকা জরুরি
মেয়ের বাবা, না থাকলে দাদা, না থাকলে ভাই—এভাবে ওয়ালির অধিকার ক্রমানুসারে নির্ধারিত
ইমাম আবু হানিফার মতে, প্রাপ্তবয়স্কা মেয়ে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারলেও তা হতে হবে উপযুক্ত পাত্র ও যৌক্তিক বিবেচনায়
বাংলাদেশের আইনে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে
বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী:
মেয়ে যদি প্রাপ্তবয়স্ক (১৮+) হয়, তবে সে নিজের সিদ্ধান্তে বিয়ে করতে পারে
তবে তার সম্মতির বিষয়টি নিবন্ধনকারী (কাজী) যাচাই করে দেখেন
মেয়ের নিরাপত্তা, প্রতারণা বা জোরের বিষয় থাকলে, আইনিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়
অর্থাৎ:
আইন অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের অভিভাবকের অনুমতি বাধ্যতামূলক নয়, তবে সামাজিক ও পারিবারিক স্থিতি বজায় রাখতে তা গ্রহণযোগ্য।
প্রেম করে বিয়ে ও অভিভাবকের সম্মতি
বর্তমানে প্রেম করে বিয়ে অনেক বেশি দেখা যায়। কিন্তু অভিভাবকের মত না থাকলে, ভবিষ্যতে সম্পর্ক ও সামাজিক দিক থেকে নানা সমস্যা হতে পারে:
পরিবারিক সম্পর্ক ভেঙে পড়া
সামাজিক অপমান
মানসিক চাপে ভোগা
আইনি ঝামেলা (বিশেষ করে মেয়ের বয়স ১৮’র নিচে হলে)
তাই যতটা সম্ভব অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে, যৌক্তিকভাবে সম্পর্ক গড়ে তোলাই উত্তম।
উপসংহার: ইসলামী শিষ্টতা ও আইনের সমন্বয়ই সেরা পথ
অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া কোনো মেয়ে বিয়ে করতে পারবে কি? — উত্তর হলো:
ইসলামে ওয়ালির অনুমতি থাকা উচিত এবং উত্তম
আইনে, ১৮ বছর বয়স পার হলে মেয়ে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে
তবে পরিবার, সমাজ ও ইসলামী নীতিমালার আলোকে সম্মতি নিয়ে বিয়ে করাই দীর্ঘমেয়াদে শান্তির কারণ হয়।