কিডনি রোগ একটি জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা, যা রোগীর খাদ্যাভ্যাসের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। সঠিক ডায়েট না মানলে রোগ আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। তাই প্রশ্ন আসে—কিডনি রোগী কি কি খেতে পারবে না? চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নিই কোন খাবারগুলো কিডনির জন্য ক্ষতিকর।
১. অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার
কিডনি রোগীদের জন্য লবণ একটি প্রধান শত্রু। অতিরিক্ত সোডিয়াম কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করে এবং রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।
বর্জনীয় খাবার:
আচার
চিপস, ফাস্টফুড
প্রক্রিয়াজাত মাংস (সসেজ, সালামি)
স্যুপ বা ইনস্ট্যান্ট নুডলস
২. উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার
যদিও প্রোটিন শরীরের জন্য দরকারি, তবে কিডনি রোগীদের অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনির উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।
সতর্কতা প্রয়োজন:
বেশি পরিমাণ মাছ, মাংস, ডিম
প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট
বিশেষ পরামর্শ: কিডনির অবস্থা অনুযায়ী ডায়েটিশিয়ান নির্দেশিত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে।
৩. উচ্চ পটাশিয়ামযুক্ত ফল ও সবজি
কিডনি ভালোভাবে পটাশিয়াম ফিল্টার করতে পারে না, ফলে রক্তে অতিরিক্ত পটাশিয়াম জমে গিয়ে হার্টে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
বর্জনীয় খাবার:
কলা
আলু
টমেটো
কমলা
খেজুর
৪. উচ্চ ফসফরাসযুক্ত খাবার
ফসফরাস বেশি হলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে ও চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বর্জনীয় খাবার:
দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য
বাদাম
চকলেট
সফট ড্রিঙ্ক
৫. অতিরিক্ত পানি ও তরল গ্রহণ
সবসময় বেশি পানি খাওয়া ভালো, এমন ধারণা কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হতে পারে।
বিশেষ করে Dialysis না করা রোগীদের জন্য তরল নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
সতর্কতা:
প্রতিদিনের তরলের পরিমাণ চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী হতে হবে
শরীর ফুলে যাওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া হলে পানি কমাতে হবে
৬. ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল
চা-কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল কিডনির কার্যক্ষমতা ব্যাহত করতে পারে।
বর্জনীয়:
কফি
শক্তিশালী এনার্জি ড্রিংক
মদ জাতীয় পানীয়
উপসংহার: কিডনি সুস্থ রাখতে খাদ্য নিয়ন্ত্রণই মূল চাবিকাঠি
কিডনি রোগী কি কি খেতে পারবে না—এই প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই নির্ভর করে রোগীর অবস্থা, কিডনির ফিল্টার করার ক্ষমতা, এবং চিকিৎসকের পরামর্শের ওপর। তবে কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললেই কিডনি রোগ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
বেস্ট প্র্যাকটিস:
খাবার গ্রহণের আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ
নিয়মিত ব্লাড টেস্ট ও ফলোআপ
ভারসাম্যপূর্ণ এবং লো-সোডিয়াম খাদ্য