ইসলামে সহীহ হাদিস একটি গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য উৎস। “সহীহ” শব্দের অর্থ বিশুদ্ধ, নির্ভুল এবং নির্ভরযোগ্য। তাই সহীহ হাদিস বলতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সেই বাণী, কাজ বা অনুমোদনকে বোঝানো হয় যা বিশুদ্ধ সূত্রে, নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীর মাধ্যমে এবং নির্ভুল শর্ত পূরণ করে আমাদের কাছে পৌঁছেছে।
সহীহ হাদিস ইসলামী শরিয়তের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উৎস, কুরআনের পরই এর অবস্থান। ইসলামি জীবনব্যবস্থার নির্দেশনা বোঝার জন্য সহীহ হাদিস অপরিহার্য।
সহীহ হাদিস চেনার উপায়
সহীহ হাদিস নির্ধারণের জন্য ইসলামি স্কলাররা কিছু নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করেছেন। এগুলো হলো:
ইসনাদ বা সূত্র শুদ্ধ হওয়া – বর্ণনাকারীরা নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত হতে হবে।
মাতন বা বক্তব্য সঠিক হওয়া – বক্তব্যে কোনো ধরনের বিরোধ বা ভুল থাকতে পারবে না।
বর্ণনাকারীরা সঠিকভাবে স্মরণশক্তিসম্পন্ন ও আমানতদার হওয়া – হাদিস সংরক্ষণ ও বর্ণনায় সততা থাকতে হবে।
হাদিসটি শায বা মুনকার না হওয়া – অন্য সহীহ হাদিসের বিরোধিতা করা যাবে না।
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম সহীহ হাদিসের সর্বোচ্চ মানদণ্ড অনুযায়ী সংকলন করেছেন।
সহীহ হাদিসের গুরুত্ব
সহীহ হাদিস ইসলামি বিশ্বাস, ইবাদত, আচার-আচরণ এবং শরিয়তের নীতিমালার মূল ভিত্তিগুলোর ব্যাখ্যা দেয়। সহীহ হাদিস ছাড়া কুরআনের অনেক আয়াত ঠিকভাবে বোঝা যায় না। যেমন:
নামাজের রাকাত সংখ্যা
হজ পালন পদ্ধতি
যাকাত নির্ধারণ
রোজার নিয়ম
এসব বিষয়ে কুরআনে সাধারণ নির্দেশনা থাকলেও বিশদ বিবরণ পাওয়া যায় সহীহ হাদিসে। তাই ইসলামী জীবনযাপনের জন্য সহীহ হাদিস অপরিহার্য।
সহীহ হাদিস কোথায় পাওয়া যায়
সহীহ হাদিস সংগ্রহ করতে হলে প্রামাণ্য হাদিস গ্রন্থগুলো অনুসরণ করতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
সহীহ বুখারী
সহীহ মুসলিম
সুনান আবু দাউদ (বিশ্বস্ত সহীহ অংশ)
জামে তিরমিজি (বিশ্বস্ত হাদিসগুলো)
বর্তমানে অনলাইনেও সহীহ হাদিস পড়া যায় বিভিন্ন ইসলামিক ওয়েবসাইট ও অ্যাপে। তবে অবশ্যই প্রামাণ্য উৎস থেকে হাদিস যাচাই করে নেওয়া উচিত।
উপসংহার
সহীহ হাদিস ইসলামের নির্ভুল দিকনির্দেশনার একটি বিশ্বস্ত বাহক। একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের উচিত কুরআনের পাশাপাশি সহীহ হাদিস অধ্যয়ন ও অনুসরণ করা, যাতে জীবন হয় শান্তিময় ও সরল রাসূল (সা.)-এর পথে।
আরও ইসলামিক ও শিক্ষামূলক আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন: usdate.blogspot.com