হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রা.) ইসলামের চতুর্থ খলিফা, রাসুল (সা.)-এর চাচাতো ভাই, জামাতা এবং অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহাবি। তিনি ছিলেন জ্ঞানে, সাহসে এবং ইমানদারিতে অতুলনীয়। তাঁর জীবন আজও মুসলমানদের জন্য এক মহৎ আদর্শ।
শৈশব ও পারিবারিক পরিচয়
হযরত আলী (রা.) কুরাইশ গোত্রের বনু হাশিম শাখায় জন্মগ্রহণ করেন ৫৯৯ খ্রিস্টাব্দে, কাবা শরিফের অভ্যন্তরে—যা ইতিহাসে একমাত্র ঘটনা। তাঁর পিতা ছিলেন আবু তালিব এবং মা ছিলেন ফাতিমা বিনতে আসাদ। রাসুল (সা.) ছোটবেলা থেকেই তাঁকে নিজের অভিভাবকত্বে গ্রহণ করেন।
সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী কিশোর
হযরত আলী (রা.) মাত্র ১০ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি শিশুদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী। শুরু থেকেই তিনি রাসুল (সা.)-এর পাশে ছিলেন এবং প্রতিটি দাওয়াতি পর্বে সক্রিয় অংশ নেন।
শাহসিকতা ও যুদ্ধক্ষেত্রে বীরত্ব
হযরত আলী (রা.) ইসলামের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন—বদর, উহুদ, খন্দক, খায়বার প্রভৃতি যুদ্ধে তিনি অসাধারণ বীরত্ব দেখান। খায়বার যুদ্ধের সময় তাঁর হাতে ইসলামের বিজয় আসে, এবং রাসুল (সা.) তাঁকে "আসাদুল্লাহ" (আল্লাহর সিংহ) উপাধিতে ভূষিত করেন।
রাসুল (সা.)-এর জামাতা ও পারিবারিক জীবন
হযরত আলী (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কন্যা ফাতিমা (রা.)-এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের ঘরে হাসান (রা.), হুসাইন (রা.), জয়নাব ও উম্মে কুলসুম জন্মগ্রহণ করেন। এই পরিবার ‘আহলে বাইত’ হিসেবে মুসলিম জগতে সম্মানিত।
খিলাফত গ্রহণ ও শাসনকাল
উসমান (রা.)-এর শাহাদাতের পর হিজরি ৩৫ সনে হযরত আলী (রা.) চতুর্থ খলিফা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর শাসনকাল ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভরা, তবে তিনি সবসময় ইসলামিক ন্যায় ও নীতির উপর অবিচল ছিলেন।
জ্ঞান, ন্যায়বিচার ও ফতওয়ার উৎস
হযরত আলী (রা.) ছিলেন সবচেয়ে বিদ্বান সাহাবিদের একজন। তিনি বহু জটিল মাসআলার সমাধান দিতেন এবং ইসলামী আইনশাস্ত্রের মূল ভিত্তির একজন হয়ে ওঠেন। হাদিস, ফিকহ ও ইজতিহাদের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অপরিসীম।
শহীদ হওয়া ও ইন্তেকাল
হিজরি ৪০ সনের রমজান মাসে ফজরের নামাজের সময় খারিজি ফিরকার একজন ব্যক্তি তাঁকে আঘাত করে। কয়েকদিন পর তিনি শাহাদাত বরণ করেন। তাঁকে কুফায় দাফন করা হয়। তাঁর শাহাদাত মুসলিম বিশ্বের জন্য এক গভীর ক্ষতি।
উপসংহার
হযরত আলী (রা.)-এর জীবন ছিল সত্য, সাহস ও জ্ঞানের প্রতীক। তিনি শুধু ইসলামের ইতিহাসেই নন, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য এক অনুকরণীয় আদর্শ। তাঁর জীবনচর্চা বর্তমান