জন্ম ও পারিবারিক পরিচয়
উসমান ইবনে আফফান (রা.) কুরাইশ বংশের বনু উমাইয়া গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ধনী, শিক্ষিত এবং নম্র স্বভাবের মানুষ ছিলেন। হিজরতের প্রায় ৪৭ বছর আগে (576 খ্রিস্টাব্দে) মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন।
ইসলাম গ্রহণ ও সাহসিকতা
তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর দাওয়াতে। তিনি ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম দশজনের একজন এবং ইসলামের জন্য বহু নির্যাতন সহ্য করেন। তাঁর ইসলাম গ্রহণ ধনাঢ্য কুরাইশদের মধ্যে আলোড়ন তোলে।
রাসুল (সা.)-এর জামাতা ও ‘জুন নূরাইন’ উপাধি
উসমান (রা.) ছিলেন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জামাতা। তিনি রাসুলের দু’জন কন্যাকে (রুকাইয়া ও পরে উম্মে কুলসুম) বিয়ে করেন। এজন্য তাঁকে ‘জুন নূরাইন’ (দুই নূরের অধিকারী) উপাধি দেওয়া হয়।
দানশীলতা ও ইসলামের প্রতি ভালোবাসা
উসমান (রা.) ছিলেন সর্বাধিক দানশীল সাহাবিদের একজন। তাবুক যুদ্ধে পুরো সেনাবাহিনীর খরচ এককভাবে বহন করেছিলেন। রওমা কূপ কিনে মুসলমানদের জন্য ওয়াকফ করেন। তাঁর সম্পদ সর্বদা ইসলামের খেদমতে ব্যয় করেছেন।
খিলাফত গ্রহণ ও প্রশাসনিক সফলতা
হিজরী ২৩ সনে হযরত উমর (রা.)-এর ইন্তেকালের পর তিনি খলিফা মনোনীত হন। তাঁর শাসনামলে ইসলামic সাম্রাজ্য আরও সম্প্রসারিত হয়—আফ্রিকা, পারস্য ও বাইজেন্টাইন অংশে বিজয় ঘটে। তিনি কুরআনের পাঠ統 একরূপ রাখতে কুরআনের একত্রিত সংস্করণ প্রচলন করেন।
কুরআনের সংরক্ষণ ও উসমানী মুসহাফ
উম্মাহর মধ্যে উচ্চারণগত পার্থক্য দূর করার জন্য তিনি একক কুরআনিক সংস্করণ তৈরি করান, যাকে ‘উসমানী মুসহাফ’ বলা হয়। এই পদক্ষেপ ইসলামের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।
অন্তর্দ্বন্দ্ব, ফিতনা ও শাহাদাত
উসমান (রা.)-এর শাসনকালের শেষদিকে কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক অসন্তোষ তৈরি হয়। বিদ্রোহীরা তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং হিজরী ৩৫ সালে কুরআন পাঠরত অবস্থায় তাঁকে শহীদ করে। তিনি শহীদ হলেও রক্তাক্ত কুরআনের পাশে তাঁর ত্যাগ অমর হয়ে আছে।
উপসংহার
হযরত উসমান (রা.)-এর জীবন ছিল এক অনুপম দৃষ্টান্ত—সততা, দানশীলতা ও ইসলামের সেবায় উৎসর্গের। আজকের মুসলমানদের উচিত তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের জীবনে তা বাস্তবায়ন করা।
📚 আরও সাহাবিদের জীবনী পড়তে ভিজিট করুন 👉 usdate.blogspot.com