প্যানক্রিয়াটাইটিস একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা যা অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াসে প্রদাহের কারণে হয়। এই রোগ হঠাৎ করে হতে পারে (অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস) অথবা দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে (ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস)। আজ আমরা জানবো প্যানক্রিয়াটাইটিস কী, এর কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিরোধের উপায়।
প্যানক্রিয়াটাইটিস কী?
প্যানক্রিয়াটাইটিস হল এমন একটি অবস্থা যেখানে অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। অগ্ন্যাশয় একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি যা হরমোন নিঃসরণ ও হজমের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম তৈরি করে। এই গ্রন্থিতে প্রদাহ হলে তা শরীরের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
প্যানক্রিয়াটাইটিস হওয়ার প্রধান কারণ
প্যানক্রিয়াটাইটিস হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন:
পিত্তথলিতে পাথর (Gallstones): এটি অগ্ন্যাশয়ের এনজাইম নিঃসরণ বাধাগ্রস্ত করে।
অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন: দীর্ঘদিন ধরে মদ্যপান করলে অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ হতে পারে।
উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড মাত্রা: রক্তে চর্বির মাত্রা বেশি থাকলে অগ্ন্যাশয়ে প্রভাব পড়ে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধ প্যানক্রিয়াটাইটিস সৃষ্টি করতে পারে।
আঘাত বা অস্ত্রোপচার: পেটের আঘাত বা অস্ত্রোপচারের পর অগ্ন্যাশয় আক্রান্ত হতে পারে।
জেনেটিক বা বংশগত কারণ
ভাইরাল সংক্রমণ (যেমন: মাম্পস ভাইরাস)
প্যানক্রিয়াটাইটিসের লক্ষণসমূহ
পেটের ওপরের অংশে তীব্র ব্যথা
বমি বমি ভাব ও বমি
জ্বর ও দুর্বলতা
পেট ফোলা বা গ্যাস জমা
খাবারে অরুচি
দ্রুত ওজন হ্রাস
কখন ডাক্তার দেখানো জরুরি?
যদি তীব্র পেটব্যথা, বমি, জ্বর ও দুর্বলতা একসাথে দেখা যায়, তাহলে দেরি না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস কখনো কখনো জীবন-ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
প্যানক্রিয়াটাইটিস প্রতিরোধে করণীয়
অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলা
চর্বিযুক্ত খাবার কম খাওয়া
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
পিত্তথলির সমস্যার চিকিৎসা নেওয়া
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ না খাওয়া
চিকিৎসা পদ্ধতি
প্যানক্রিয়াটাইটিসের চিকিৎসা নির্ভর করে এর তীব্রতা ও ধরন অনুযায়ী। সাধারণতঃ
হাসপাতালে ভর্তি করে স্যালাইন, ব্যথানাশক ও অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়
বিশেষ খাদ্যনির্দেশনা অনুসরণ করতে হয়
জটিল ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে
উপসংহার
প্যানক্রিয়াটাইটিস একটি জটিল রোগ হলেও সচেতনতা, সঠিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আপনার বা আপনার পরিবারের কারও যদি উপরে উল্লেখিত উপসর্গ থাকে, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
আরও স্বাস্থ্য-বিষয়ক তথ্য পেতে ভিজিট করুন 👉 https://usdate.blogspot.com