ব্যাংক সম্পর্কে আমরা কম বেশি সবাই জানি। ব্যাংক মানুষের জীবনের সাথে জড়িত হয়ে আছে।ব্যাংকের ব্যবহার দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
১৪০০ সাল থেকে ব্যাংক ব্যবস্থার আধুনিক যুগের সূচনা হয়েছিল। ১৪০১ সালে 'ব্যাংক অব বার্সিলোনা' প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ব্যাংকের কার্যাবলী বিস্তৃত হতে থাকে। এ ব্যাংককেই বিশ্বের সর্বপ্রথম আধুনিক ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিতকরা হয়। এখান থেকে ব্যাংকিং কার্যক্রম আধুনিকায়ন হতে থাকে। বর্তমান সময়ে ডিজিটাল ব্যাংকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী।
ডিজিটাল ব্যাংক কি?
ডিজিটাল ব্যাংক বলতে অনলাইন নির্ভর ব্যাংকে বোঝায়। যা সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক হয়ে থাকে।এতে অনেক নুতন কিছু যুক্ত হয়,যা আগের ব্যাংকিং সিস্টেম থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য অনুযায়ী,না থাকবে ব্যাংকের কোন শাখা অথবা উপশাখা,না থাকবে এটিএম বুথ,শশরীরের লেনদেন থাকবে না। সবকিছু অনলাইন নির্ভর হবে। প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থায়, কিছু সুবিধা প্রযুক্তি নির্ভর হয়, বাকিগুলো মানব দ্বারা পরিচালিত। কিন্তু ডিজিটাল ব্যাংক এ সবকিছুই মানব ছাড়া হবে, এবং সবকিছু প্রযুক্তি নির্ভর।
ডিজিটাল ব্যাংক লেনদেন কিভাবে হবে?
👉 শশরীরে ব্যাংকে যাওয়া লাগবে না।
👉 মোবাইল এপস ব্যবহার করে গ্রাহকরা লেনদেন করতে পারবেন।
👉ব্যাংকের নিজস্ব কোন শাখা কিংবা উপশাখা থাকবে না।
👉 এটিএম,সিডিএম বুথ থাকবে না।তবে একটা প্রধান কার্যালয় থাকবে।
👉 এজেন্ট ব্যাংকিং ও থাকবে না।
👉 ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড বা অন্য প্রযুক্তিনির্ভর সেবা থাকবে।
👉 জাতীয় পরিচয় পত্র, এবং নিজের তথ্যাদি আপলোড করে একাউন্ট করা যাবে।
👉ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে ও প্রয়োজনীয় তথ্যাদি আপলোড করে ঋণের আবেদন করতে পারবেন।
👉যারা বেতন-ভাতা ও ব্যবসার জন্য টাকা গ্রহণ করবেন,তারাও অনলাইনে একাউন্ট করতে পারবেন।
👉 অন্য ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবহার করে ও টাকা জমা করা যাবে।
👉অন্যদের একাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানো যাবে।
👉অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ ও সেবা ব্যবহার করে নগদ অর্থ উত্তোলন করা যাবে।
👉 ডিজিটাল ব্যাংক ছোট আকারের ঋণ দিতে পারবে।
👉 বড় বা মাঝারি কোন শিল্পে ঋণ দিতে পারবে না।
👉 বৈদেশিক বানিজ্যের জন্য কোন ঋণপত্র ও খুলতে পারবে না।
👉 প্রযুক্তি নির্ভর হওয়ার কারণে এই ব্যাংকগুলোর সেবা ২৪ ঘন্টা খোলা থাকবে।
প্রচলিত ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের সাথে ডিজিটাল ব্যাংকিং এর পার্থক্য
প্রচলিত ইন্টারনেট ব্যাংক
👉 প্রচলিত ব্যাংক হচ্ছে সময় নির্ভর।
👉 অধিকাংশ সেবার জন্য ব্যাংকে যেতে হয়।
👉ঋণ নেওয়া,আমানত খোলা, স্টেটমেন্টের জন্য ব্যাংকে যেতে হয়। সেখানে গিয়ে কাগজপত্র স্বাক্ষর করতে হয়।
ডিজিটাল ব্যাংক
👉 ডিজিটাল ব্যাংক হবে সম্পূর্ণ দ্রুতগতি সম্পন্ন ব্যাংক।
👉 শশরীরে যেতে হবে না। সবকিছু হবে ভার্চুয়ালি।
👉ঋণ থেকে শুরু করে স্টেটমেন্টে সব সুবিধা পাওয়া যাবে ভার্চুয়ালি।
👉 সার্বক্ষণিক অনলাইন ভার্চুয়াল সুবিধা মিলবে।
👉 লেনদেনের সব বিষয় ভার্চুয়ালি হবে।
ডিজিটাল ব্যাংকের গ্রাহকদের সুবিধা-অসুবিধা
ডিজিটাল ব্যাংক গ্রাহক সুবিধা
👉 ব্যাংকে যেতে হবে না গ্রাহকদের।
👉 বারবার ব্যাংকে না যাওয়ার কারণে সময় সাশ্রয় হবে।
👉 ব্যাংকের শাখা না থাকায়,ব্যাংকের পরিচালনা খরচ শতভাগ কমে আসবে।
👉ব্যাংক পরিচালনা খরচ কম হওয়ার কারণে,ব্যাংকগুলো অত্যধিক গ্রাহক সুবিধা নিশ্চিত করতে পারবে।
👉 বাংলাদেশের যেকোন প্রান্ত থেকে গ্রাহক একাউন্ট খুলতে ও লেনদেন করতে পারবে।
👉 ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকবে গ্রাহক সেবা।
ডিজিটাল ব্যাংক গ্রাহক অসুবিধা
👉 অন্যদিকে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার না জানার কারণে,ব্যাংকিং সুবিধা নেওয়া কঠিন হবে।
👉 দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে আধুনিক মোবাইল না থাকায় এই ব্যাংকিং সুবিধা ব্যব কঠিন হবে তাদের জন্য।
👉 অধিকাংশ মানুষকে এই সেবার আওতায় আনা কঠিন হবে।
👉ক্যাশলেস সুবিধার আওতায় আসতে প্রয়োজন হবে,প্রচুর পরিমাণে, প্রচারণা ও প্রশিক্ষণ।
বিঃদ্রঃ মোবাইল ব্যাংকিং এ মানুষ যেভাবে অভ্যস্ত হয়েছে, ডিজিটাল ব্যাংকিং এ মানুষ অভ্যস্ত হয়ে পরবে।
প্রচলিত ব্যাংকিং থেকে ডিজিটাল ব্যাংকিং,ক্যাশলেস ব্যাংকিং অনেক জনপ্রিয় অধিকাংশ দেশে।