ডেঙ্গু হল এক প্রকার মশা-বাহিত ভাইরাল সংক্রমণের রোগ। এডিস নামের বিশেষ প্রকারের মশার কামড়ের ফলে মানুষের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমন ঘটে
👉 স্ত্রী এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু ছড়ায়।
👉 ডেঙ্গু মৌসুমী রোগ,যখন মশার পাদুর্ভাব ভাব বেশি হয় তখন এই রোগ ছড়ায়।
👉 ডেঙ্গু গ্রীষ্ম অঞলীয় রোগ।
👉 ডেঙ্গুর স্থায়ী অথবা নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নাই।
👉 বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি বছর ৩৯ কোটি মানুষ সংক্রমিত হয়।
👉 শহরাঞ্চলে ডেঙ্গুর পাদুর্ভাব বেশী হয়।তার কারণ হলো অনেক মানুষের আগমন, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট ও বাড়ি নির্মাণ।
👉 বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ভ্রমনের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায় বেশি। এবং ৩০ গুন বেশি ছড়ায়।
২০২৩ এর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ভিন্ন
এবারের ডেঙ্গু একটু ব্যতিক্রম। চলুন জেনে নেওয়া যাক। প্রতিটি রোগ প্রতিবার নতুন নতুন উপসর্গ নিয়ে আসে, এবারের ডেঙ্গুও তাই।
👉 এডিস মশার ঘনত্ব বেশী।
👉 প্রজননস্থলের ঘনত্ব অথবা সংখ্যা বেশি।
👉 দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার ও আক্রান্ত হচ্ছে।
👉 অনেকের ক্ষেত্রে শুধু বমি হচ্ছে,জ্বর নেই।
👉 জ্বর না থাকায় অনেকের ক্ষেত্রে টেস্ট করে ডেঙ্গু শনাক্ত হচ্ছে।
👉 অনেকের ক্ষেত্রে শুধু ডায়রিয়া হচ্ছে,৫ দিনেও থামছে না ডায়রিয়া, টেস্ট করে পরে ডেঙ্গু শনাক্ত হচ্ছে।
👉 এবারের ডেঙ্গুতে অনেকের ক্ষেত্রে বুকে পানি জমছে।
👉 প্রচন্ড পেটে ব্যথা।
👉 বমি হওয়া।
👉 মাথা ধরা বা ব্যথা।
👉 শরীর খিঁচুনি ও ব্যথা।
👉 দূর্বলতা ও অবসাদ দেখা দেওয়া।
👉 হাত পা ফুলে যাওয়ার মতো উপসর্গ ও দেখা দিচ্ছে।
👉 রক্তচাপ কমে যাওয়া।
👉 মস্তিষ্কে প্রদাহ।
ডিজিটাল ব্যাংক লেনদেন কিভাবে হবে
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ
🦟 শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি হওয়া।
🦟 তীব্র মাথাব্যথা।
🦟 চোখের পেছনে প্রচন্ড ব্যথা হওয়া।
🦟 শরীরের পেশী ও জয়েন্টগুলো ব্যথা হওয়া।
🦟 বারবার বমি হওয়া।
🦟 নাসিয়া গ্লান্ড ফুলে যাওয়া ও শরীরে র্যাশ উঠা।
তীব্র ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
🦟 শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক কমে যাওয়া।
🦟 তীব্র পেট ব্যথা।
🦟 ক্রমাগত বমি করা,বমির সাথে রক্ত যাওয়া।
🦟 ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া।
🦟 শরীরের অবসাদ ও অস্থিরতা অনুভব করা।
👉👉 ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায় 👈👈
ডেঙ্গু জ্বর হলে করণীয়
🦟 জ্বর হলেই ডাক্তার এর শরনাপন্ন হতে হবে।
🦟 প্রাথমিক জ্বরের চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
🦟 জ্বর না কমলে টেস্ট করাতে হবে।
🦟টেস্টের মাধ্যমে ডেঙ্গু শনাক্ত হলে,দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বর কত দিন থাকে
ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশা কাউকে কামড়ালে দুই থেকে সাত দিনের মধ্যে তাঁর জ্বর হয়। অনেক ক্ষেত্রে এর বেশি ও হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে
কয়েকটি খাবার বিশেষ তালিকায় রাখলেই দ্রুত ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।ডেঙ্গু রোগীকে কয়েকটি বিশেষ খাদ্যাভ্যাস করতে হয়।
👉 দুগ্ধ জাতীয় সবধরনের খাবার অতীব জরুরি।
👉 বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময় ডায়েটে প্রোটিন, প্রোবায়োটিক ও আয়রনযুক্ত খাবার থাকা জরুরি।
👉 দুধ, দই ও দুগ্ধজাত খাবার প্রোবায়োটিকসের সমৃদ্ধ উৎস।
👉 দইয়ে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস নামক ব্যাকটেরিয়া আমাদের অন্ত্রের উপকার করে।
👉 ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে দুগ্ধজাত খাবার শরীরে পটাশিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়ামের পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
👉 ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য প্রোটিন জাতীয় খাবার তাড়াতাড়ি রোগ সারাতে মুখ্য ভূমিকা নেয়। তাই এই সময় খাবারে মাছ, মাংস, ডাল, ডিম, বাদাম ইত্যাদি থাকা একান্ত জরুরি।
👉 প্লেটলেটের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে পরিচিত হল পেঁপেঁপাতার রস। তেতো লাগলেও এই রস ডেঙ্গুর মোকাবিলায় ভীষণ উপকারী।
👉 ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে তরল খাবার খাওয়া তুলনায় সহজ। তাই এই সময় শক্ত খাবারের পরিবর্তে তরল খাবার যেমন মাংসের স্যুপ,দইয়ের লস্যি ইত্যাদি খাওয়ানো উচিত।
👉 সবুজ শাকসবজি ভিটামিন কে ও আই-এর সমৃদ্ধ উৎস। এই দুটি ভিটামিনই রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন। পার্সলে পাতা, পালং শাক, পুদিনা, বাধাকপি, শতমূলী ইত্যাদি রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে।
👉 ভিটামিন সি ও ফোলেটও প্লেটলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। কমলালেবু, পাতিলেবু, জলপাই, আনারস, বেরি ও কিউই ফল এই ভিটামিনের সমৃদ্ধ উৎস।
👉 ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসক কুমড়ো খাওয়ার পরামর্শ দেন। কুমড়ো ভিটামিন এ-এর সমৃদ্ধ উৎস যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
ডেঙ্গু জ্বরের বাহক কোন মশা
ডেঙ্গু জ্বরের বাহক হলো এডিস মশা,তবে স্ত্রী এডিস মশাকে সর্বাধিক ডেঙ্গুর বাহক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর সময়
বেশিরভাগ মানুষ জানে না,ডেঙ্গু মশা কখন কামড়ায়।তাই এটার প্রতি কৌতুহল এবং নিরাপত্তার জন্য তা জানার চেষ্টা করে থাকেন।
🦟 ডেঙ্গু বাহক মশা রাতেও কামড়াতে পারে।
🦟 এডিস মশা দিনের বেলায় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। প্রধানত সূর্যোদয়ের দুই ঘন্টা পরে এবং সূর্যাস্তের কয়েক ঘন্টা আগে। তবে এই মশাগুলি স্পষ্টতই রাতের বেলায় মানুষকে কামড়াতে দেখা গেছে, প্রধানত ভাল আলোযুক্ত জায়গাগুলিতে।
🦟 এডিস মশা নিচু থাকে এটি পিছন থেকে পায়ের গোড়ালি এবং কনুই কামড়ায়।
এডিস মশা কোন রোগ ছড়ায়
এডিস মশা হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরের বাহক।এডিস মশা দ্বারাই ডেঙ্গু ছড়ায়।
ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিকার
👉 পরিবার, প্রতিবেশী ও কমিউনিটির মধ্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
👉 সব সময় মশারি টাঙাতে হবে।
👉 ফুল হাতা জামা পরতে হবে। যতদূর সম্ভব ঢেকে রাখা নিজেকে।
👉 পরিচ্ছন্নতা অভিযানে সবাইকে সরাসরি যুক্ত হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
👉 বাড়ির আশপাশে পানি যাতে না জমে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
👉 ঘর ও আশপাশের যেকোনো জায়গায় পানি জমতে দেয়া যাবে না।
👉 ব্যবহৃত পাত্রের গায়ে লেগে থাকা মশার ডিম অপসারণে পাত্রটি ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে।
👉 গাড়ির গ্যারেজ আর বহুতল ভবন হলো লার্ভার মূল আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
👉 ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা বা নারিকেলের মালা, কনটেনার, মটকা, ব্যাটারি ইত্যাদিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে, বিধায় এগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে।
👉 একমাত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা পারে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে।
মশা কামড়ানোর কতদিন পর ডেঙ্গু হয়
এডিস মশা মানে ডেঙ্গুর বাহক মশা কামড়ানোর দুই থেকে সাত দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বর হয়।