ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য হলেও অতিরিক্ত ঘুম শরীর ও মনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অনেকেই দিনের অধিকাংশ সময় ঘুমিয়ে কাটান অথবা সকালে ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয়। এই লেখায় আমরা জানব অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তির কার্যকর উপায় সম্পর্কে।
অতিরিক্ত ঘুমের কারণ কী হতে পারে?
অতিরিক্ত ঘুমের পেছনে থাকতে পারে একাধিক কারণ:
মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশন
অপর্যাপ্ত রাতে ঘুম ও অনিয়মিত সময়
হরমোনজনিত সমস্যা
শরীরে আয়রন বা ভিটামিন ঘাটতি
ঘুমের রোগ (Sleep Apnea, Hypersomnia ইত্যাদি)
তাই সঠিক সমাধানের জন্য আগে কারণ চিহ্নিত করা জরুরি।
নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি করুন
ঘুম কমাতে হলে প্রথম পদক্ষেপ হলো সঠিক ঘুমের সময়সূচি তৈরি করা। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও জাগার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লক ঠিক থাকে এবং অতিরিক্ত ঘুম আসা বন্ধ হয়।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরচর্চা করুন
সকালে ঘুম ভাঙার পর হালকা ব্যায়াম বা হাঁটা শরীরকে চনমনে করে এবং ঘুম কাটাতে সহায়তা করে। এটি সারা দিনের ক্লান্তি কমায় এবং অতিরিক্ত ঘুমে যাওয়া থেকে বিরত রাখে।
ডায়েট ও পানীয়ের দিকে খেয়াল রাখুন
অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট বা চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
ঘুমানোর আগে চা-কফি ও ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন
এই অভ্যাসগুলো ঘুমের মান উন্নত করে এবং অতিরিক্ত ঘুম নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
দিনের মধ্যে ঘুমালে নিয়ন্ত্রণে রাখুন
দিনের বেলায় ঘুমানোর অভ্যাস অতিরিক্ত ঘুমের অন্যতম কারণ হতে পারে। যদি ঘুমানই, তাহলে তা যেন ২০–৩০ মিনিটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। দীর্ঘ সময় ঘুমানো রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখা খুবই জরুরি
অনেক সময় অতিরিক্ত ঘুম ডিপ্রেশন বা স্ট্রেস এর ফলাফল হতে পারে। মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন, সময়মতো বিশ্রাম, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো কার্যকর হতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়
যদি উপরোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করার পরও অতিরিক্ত ঘুমের সমস্যা থাকে, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হতে পারে আপনি কোনো ঘুমজনিত রোগে ভুগছেন, যার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন।
উপসংহার
অতিরিক্ত ঘুম একদিকে যেমন অলসতা সৃষ্টি করে, অন্যদিকে এটি শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপ ব্যাহত করে। তাই সময়মতো ঘুমানো, সক্রিয় জীবনযাপন এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।