বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় | biral kamor dile ki koronio

বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় | biral kamor dile ki koronio


অনেকেই ভাবেন কুকুর কামড়ালেই র‍্যাবিসের ভয়, কিন্তু বাস্তবে বিড়াল কামড়ালেও জলাতঙ্ক বা র‍্যাবিস হতে পারে। র‍্যাবিস একটি মারাত্মক ভাইরাসজনিত রোগ যা প্রায় ১০০% ক্ষেত্রেই মৃত্যুবরণ ঘটায়, যদি সময়মতো চিকিৎসা না নেওয়া হয়। তাই বিড়াল কামড়ের পর টিকা নেওয়া জরুরি। আজকের প্রবন্ধে জানবো বিড়াল কামড়ানোর পর কী করা উচিত এবং কত সময়ের মধ্যে টিকা দিতে হয়।


র‍্যাবিস কী?

র‍্যাবিস (Rabies) হলো এক ধরনের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে সংক্রমণকারী ভাইরাস, যা সাধারণত সংক্রামিত প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই ভাইরাস একবার শরীরে ছড়িয়ে পড়লে তা প্রাণঘাতী হতে পারে।


বিড়াল কামড়ালে র‍্যাবিস হতে পারে কি?

হ্যাঁ, যদি বিড়ালটি র‍্যাবিস ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে থাকে, তাহলে তার কামড় থেকেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। বিশেষ করে:

  • রাস্তায় ঘোরাঘুরি করা বেওয়ারিশ বা অসুস্থ বিড়াল

  • টিকা না দেওয়া পোষা বিড়াল

তবে ঘরের টিকাপ্রাপ্ত সুস্থ বিড়াল দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক কম।


বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয়?

বিড়াল কামড়ানোর পরে যত দ্রুত সম্ভব, অর্থাৎ সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রথম র‍্যাবিস টিকা নেওয়া উচিত।

র‍্যাবিস টিকার সময়সূচি:

  • ০ তম দিন (যেদিন কামড়েছে): প্রথম ডোজ

  • ৩য় দিন: দ্বিতীয় ডোজ

  • ৭ম দিন: তৃতীয় ডোজ

  • ১৪তম দিন: চতুর্থ ডোজ

  • ২৮তম দিন: পঞ্চম ডোজ (প্রয়োজনে)

🔴 দ্রুত টিকা না নিলে ভাইরাস শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা জীবনহানিকর হতে পারে।


বিড়াল কামড়ানোর পর তাৎক্ষণিক করণীয়

১. জায়গাটি পরিষ্কার করুন: সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে ১০–১৫ মিনিট ধুয়ে ফেলুন।
২. অ্যান্টিসেপ্টিক দিন: বিটাডিন বা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ব্যবহার করুন।
3. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: দেরি না করে নিকটস্থ হাসপাতালে যান।
4. র‍্যাবিস ইমিউনোগ্লোবুলিন (RIG): গুরুতর কামড়ের ক্ষেত্রে এটিও দিতে হয়।


বিড়াল কামড়ের ঝুঁকি বেশি কখন?

  • বিড়ালের দাঁত দিয়ে রক্তপাত হলে

  • যদি আঁচড় গভীর হয়

  • যদি বিড়ালটি পাগল বা অস্বাভাবিক আচরণ করে

  • টিকা না দেওয়া বিড়াল কামড়ালে

  • রাস্তায় থাকা বা বেওয়ারিশ বিড়াল কামড়ালে


পোষা বিড়াল কামড়ালে কী করব?

  • যদি বিড়ালটি সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ও সুস্থ হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে টিকা না নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয় (চিকিৎসকের ওপর নির্ভর করে)।

  • তবে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রথম ডোজ দিয়ে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকা ভালো।


র‍্যাবিস প্রতিরোধে করণীয়

  • পোষা বিড়ালকে নিয়মিত র‍্যাবিস টিকা দিন (সাধারণত বছরে একবার)

  • বাচ্চাদের বিড়ালের সাথে খেলার সময় নজর রাখুন

  • রাস্তার বিড়ালদের স্পর্শ করতে নিষেধ করুন

  • কামড় বা আঁচড় লাগলে অবহেলা করবেন না


উপসংহার

বিড়াল কামড়ানোকে হালকাভাবে নিলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে। র‍্যাবিস একটি ভয়ংকর ভাইরাসজনিত রোগ, যার একমাত্র প্রতিকার হলো সময়মতো টিকা নেওয়া। তাই বিড়াল কামড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সচেতনতাই পারে জীবন রক্ষা করতে।


আরও স্বাস্থ্য ও জনসচেতনতা বিষয়ক লেখা পেতে ভিজিট করুন 👉 https://usdate.blogspot.com



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন